স্টাফ রিপোর্ট: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয়ের পর প্রেম। আর প্রেমের টানে প্রেমিকের হাত ধরে ঘর ছাড়েন ফারহানা আক্তার সাদিয়া (১৮)। ঘটনাটি ঘটেছে প্রায় সাত মাস আগে। সেই তরুণীর মরদেহ টাই হয় ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিডফোর্ট) হাসপাতালের হিমাগারে। শনিবার (৮ জানুয়ারী) পুলিশ সূত্রে খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান নাদিয়ার বাবা-মা ও স্বজনরা। এর আগে শুক্রবার (৭ জানুয়ারী) রাত ৯টার দিকে বাসার লোকজন নাদিয়াকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কতর্ব্যরত চিকিৎসক নাদিয়াকে মৃত ঘোষণা করে। সে সিলেট নগরের রায়নগর দর্জিপাড়া এলাকার মাসুম মিয়ার কন্যা। কথিত প্রেমিক আসিফুর রহমান ঢাকার গেন্ডারিয়া ব্যানার্জী চৌধুরী রোডের ১৪/২নং বাসার আমিনুর রহমানের পুত্র। পুলিশ ঘটনাটিকে প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলে ধারণা করলেও নাদিয়ার বাবা বিষয়টি ভিন্নভাবে দেখছেন। তিনি বলছেন, তার কথিত প্রেমিক আসিফ তার মেয়েকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। ঢাকার গেন্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত মো. নুর আলম সিদ্দিকী বলেন, হাসপাতাল থেকে নাদিয়ার আত্মহত্যার বিষয়টি জানানো হয়েছে। সেখান থেকে প্রাপ্ত তথ্যে আমরা নাদিয়ার পরিবারকে বিষয়টি অবগত করি। তবে নিহত নাদিয়ার পরিবারের অভিযোগ পেলে তা আমলে নিয়ে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রায় সাড়ে ৭মাস আগের ঘটনা। তার মেয়ে এসএসসিতে এক বিষয়ে ফেল করেন। তান তার মেয়ের বয়স ছিল ১৭ বছর ৫মাস। করোনার কারণে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ হয়ে ওঠেনি। তখন ফেসবুকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে আসিফ। একপর্যায়ে তাকে ফুসলিয়ে ঢাকায় নিয়ে যায় আসিফ। বর্তমানে ওই তরুণীর বয়স ১৮ বছর ৪মাস। তাদের মধ্যে বিয়ে হয়েছে কি না তাও পরিবার জানেন না। শুক্রবার রাত ১১টায় পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়েছি, মেয়ের মরদেহ হাসপাতালে মর্গে রাখা হয়েছে। খবর পেয়েই ছুটে যাই হাসপাতালে। গিয়ে দেখি নাদিয়ার মরদেহ হাসপাতালে। তিনি বলেন আসিফ পুলিশকে জানিয়েছে, সে নাকি সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাসা থেকে বেরিয়ে যান। সাড়ে ৮টায় এসে দেখতে পান নাদিয়া ‘আত্মহত্যা করেছেন।
তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে নাদিয়ার বাবা বলেন, শুক্রবার দুপুরেও নাদিয়া তার মায়ের সঙ্গে কথা বলেছে। সে আত্মহত্যা করবে এটা কোনভাবেই সম্ভব নয়। তার মুখে ও মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার মেয়েকে নির্যাতন করে হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে আসিফ।
এব্যাপারে ঢাকার গেন্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত মো. নুর আলম সিদ্দিকী বলেন, আসিফ বাইক মেকানিক। তার দাবী, সন্ধ্যা ৬টায় বাসা থেকে বেরিয়ে যান। পরে রাত সাড়ে ৮টায় বাসায় এসে নাদিয়ার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হবে। তবে পরিবারের অভিযোগ পেয়ে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তীতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে নিহত নাদিয়ার মরদেহ ময়নাতদন্তের পর স্বজনদের হাতে হস্তান্তর করা হবে। এরপর স্বজনরা মরদেহটি সিলেটে নিয়ে আসবেন বলেও জানান।