স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে যেতে ইচ্ছুকদের জন্য বিশেষ সুবিধা ঘোষণা করেছে দেশটি। ১৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এ বিশেষ সুবিধার মেয়াদ আগামী আট সপ্তাহ পর্যন্ত থাকছে। এ সুবিধার আওতায় স্টুডেন্ট ভিসা ফি’র ৬৩০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার ফেরত দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এর জন্য অবশ্যই ১৯ মার্চের ভেতরে অস্ট্রেলিয়া প্রবেশ করতে হবে। অস্ট্রেলিয়া সরকার আশা করছে এর ফলে টিকা নেওয়া আন্তজার্তিক শিক্ষার্থীরা দ্রুত আবার অস্ট্রেলিয়া ফিরে আসবেন। আবার বাড়তি সময় কাজের যে অনুমতি দেওয়া হয়েছে তাতে দেশটিতে বিদ্যমান শ্রমঘাটতিও পূরণ হবে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমনন্ত্রী স্কট মরিসন ঘোষণা দিয়েছেন, যাদের স্টুডেন্ট ভিসা রয়েছে তারা এখন থেকে যেকোনো খাতে ২০ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে পারবে।
তিনি বলেন, প্রায় দেড় লাখ শিক্ষার্থীর কাছে ভিসা রয়েছে, আমরা তাদের অস্ট্রেলিয়া ফিরে আসতে উৎসাহ দিচ্ছি। আমরা বাড়তি যে সুবিধা দিচ্ছি সেটা তাদের লেখাপড়ার জন্য অস্ট্রেলিয়াকে বেছে নেওয়ার জন্য ও ফিরে আসার জন্য কৃতজ্ঞতা স্বরুপ দিচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, একইসঙ্গে আমরা এটিও চাই যে, তারা ফিরে আসুক এবং কিছু খাতে যে শ্রমঘাটতি রয়েছে তা পূরণ করুক। এটা আমাদের জন্য খুবই জরু।
অস্ট্রেলিয়ান ট্রেজারার জশ ফ্রাইডেনবার্গ বলছেন, ভিসা ফি ফেরত দেওয়ার জন্য তাদের বাড়তি সাড়ে ৫ কোটি ডলার খরচ হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে ৩ লাখ ২৪ হাজার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী রয়েছে, যারা অস্ট্রেলিয়াতে থেকে পড়ালেখা করছেন। ২৩ হাজার ৫০০ জনের হাতে অফশোর ওয়ার্কিং হলিডে ভিসা রয়েছে এবং ১৮ হাজার ৫০০ জনের হাতে রয়েছে অনশোর। তাই এ উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই।
নতুন ভিসা আবেদনের জন্য এ সুবিধা প্রযোজ্য হবে বলেও জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। নতুন আবেদনগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
যারা এ সুবিধা নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন গোটা বিষয়টা তাদের আকৃষ্টি তো করবেই, অস্ট্রেলিয়া নিয়ে মানুষের মধ্যে এর ফলে নতুন করে আগ্রহ সৃষ্টি হবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
দ্য সিডনি মর্নিং হেরাল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান নির্বাহী বলছেন, অস্ট্রেলিয়াতে বিদ্যমান শ্রমঘাটতি পূরণে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে না কি সত্যিই শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, অনেকে এমন প্রশ্ন তুলছেন।অস্ট্রেলিয়াতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলো এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। একে সময়োপযোগী ও দরকারি উদ্যোগ বলেও আখ্যায়িত করেছেন তারা।
এছাড়া ভিসা আবেদনগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির ঘোষণাকেও স্বাগত জানিয়েছে তারা। তারা বলছে, আগামী দু’মাসের মধ্যে যারা লেখাপড়া করতে অস্ট্রেলিয়াতে আসতে চাচ্ছেন তাদের জন্য এটা খুবই ভালো একটা খবর।
তবে প্রতি ১৫ দিনে শিক্ষার্থীদের ৪০ ঘণ্টা কাজের যে সীমা বাঁধা ছিল তা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তকে সতর্কতার সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
মহামারির এই সময়ে শিক্ষার্থীরা কাজের পর্যাপ্ত সুযোগ যেন পান সেদিকে নজর রাখতেই হবে। তবে একই সঙ্গে এটাও খেয়াল রাখতে হবে যে এতে যেন তাদরে কোর্স প্রগ্রেস ব্যাহত না হয়।
শিক্ষার্থীরা কত সময় কাজ করতে পারবেন সে বিষয়টি আবার এপ্রিলে পুনর্বিবেচনা করা হবে। এছাড়া আলাদাভাবে কুইন্সল্যাগ ঘোষণা দিয়েছে যে, যারা টিকার পুরো ডোজ নিয়েছেন তাদের সেখানে পৌঁছানোর পর কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে না। কুইন্সল্যান্ড ইতোমধ্যে মোট জনসংখ্যার ৯০ শতাংশকে টিকার পুরো ডোজ দিয়েছে।