সংগীতের দেবী লতা মঙ্গেশকর পাড়ি জমালেন অনন্তলোকে। কেবল ভারত নয়, উপমহাদেশজুড়ে আজ তাই শোকের বাতাস বহমান। রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সুরসম্রাজ্ঞী। বিকেলে তার শেষ যাত্রার আয়োজন করা হয়। লতা মঙ্গেশকরের অন্তিমযাত্রায় দেখা গেছে মানুষের ঢল। হাজার হাজার ভক্ত, অনুরাগী ছুটে এসেছেন প্রিয় শিল্পীকে শেষবারের মতো দেখতে, শ্রদ্ধা জানাতে। মানুষের চাপ সামলাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও হিমশিম খেতে হয়েছ।
মুম্বাইয়ের শিবাজি পার্কে রাখা হয় লতা মঙ্গেশকরের মরদেহ। সেখানে তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রয়াত শিল্পীর মরদেহে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পাশাপাশি মাথা নিচু করে প্রণাম করেন তিনি। এরপর ভারতের রাজনীতি, সিনেমা ও সংগীতাঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। ছিলেন বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খান, লেখক জাভেদ আখতার, ক্রিকেট ঈশ্বর খ্যাত শচীন টেন্ডুলকার, আমির খান, রণবীর কাপুরের মতো তারকারা।
জানা গেছে, লতা মঙ্গেশকরের শেষকৃত্যের আচার পালন করেছেন আটজন পুরোহিত। ভারতীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
এদিকে লতার প্রয়াণে ভারতে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার মহারাষ্ট্র রাজ্যে ঘোষণা করা হয়েছে সরকারি ছুটি। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গেও অর্ধদিনের ছুটি দিয়েছে রাজ্য সরকার।
১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর লতা মঙ্গেশকরের জন্ম ভারতের মধ্যপ্রদেশের এক মারাঠি পরিবারে। বাবার হাত ধরে গান ও অভিনয়ের জগতে প্রবেশ করেন তিনি। ১৩-১৪ বছরে প্রথম গান গেয়েছিলেন মারাঠি সিনেমায়। হিন্দিতে প্রথম প্লেব্যাক করেন ‘মজবুর’ সিনেমায়।
চার সপ্তাহ ধরে করোনা, নিউমোনিয়া আর বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতার সঙ্গে লড়াই করেছেন লতা মঙ্গেশকর। গত ৯ জানুয়ারি তার করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে। সেখানে অবস্থার অনেকটাই উন্নতি হয়েছিল লতার। ৩০ জানুয়ারি তার করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। ভেন্টিলেশন থেকে বের করে নিয়ে আসা হয় সুরসম্রাজ্ঞীকে। কিন্তু দুদিন আগে পুনরায় তার অবস্থার অবনতি হয়। অবশেষে রোববার সকালে সবাইকে কাঁদিয়ে চলে যান না ফেরার দেশে।