জাকির হোসেন, বরিশাল থেকে:: বরিশালের বানারীপাড়ায় দক্ষিণ নাজিরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রশংসাপত্রের নামে ৫ শত টাকা করে ফি নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারী) সকালে সদ্য এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মো. হাফিজ খান দিনারের পিতা বন্দর বাজারের ব্যবসায়ী মো. মনির হোসেন ছেলের পক্ষে স্কুলে প্রশংসাপত্র আনতে গেলে তার কাছে ৫শত টাকা চাওয়া হয়। ওই টাকা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে নেওয়া হচ্ছে বলে তাকে প্রধান শিক্ষক জানান। তখন তিনি এর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন করলে তার সঙ্গে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষক জামাল হোসেন অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। পরে বাধ্য হয়ে তিনি ৫ শত টাকা দিয়ে ছেলের প্রশংসাপত্র গ্রহণ করেন। এসময় তাকে প্রশংসাপত্র ফি গ্রহণ হিসেবে ৫শত টাকার রসিদ দেওয়া হয়। এদিকে প্রশংসাপত্র বাবদ কোনো ফি নেওয়ার বিধান না থাকলেও ওই স্কুলের এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সব শিক্ষার্থীর কাছ থেকেই রসিদ দিয়ে ৫শত টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ করেন অনেক অভিভাবক।
এ ব্যাপারে ভূক্তভোগী মনির হোসেন জানান, পৌর শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডে সন্ধ্যা নদীর তীরবর্তী দক্ষিণ নাজিরপুর এলাকার বসবাসকারী অধিবাসীদের মধ্যে অধিকাংশই হতদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ। পার্শ্ববর্তী সরকারি বানারীপাড়া মডেল ইউনিয়ন ইনস্টিটিউট (পাইলট) হাইস্কুল থাকলেও আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে নিম্ন আয়ের পরিবারের ছেলে-মেয়েরা দক্ষিণ নাজিরপুর স্কুলে ভর্তি হন। বিষয়টি দুর্ণীতি দমন কমিশনের ( দুদক) ১০৬ নম্বর হটলাইনে কল করে
শিক্ষার্থীর বাবা মনির হোসেন অভিযোগ করলে সেখান থেকে তাকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়। পরে মনির হোসেন বিষয়টি পটুয়াখালীতে অবস্থান করা বানারীপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তফা আলমকে মুঠোফোনে জানান। তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে তাকে আশ্বস্ত করেন। এ বিষয়ে দক্ষিণ নাজিরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জামাল হোসেন মুঠোফোনে বলেন, তিনি নতুন যোগদান করেছেন। পূর্ব থেকে চলে আসা নিয়মে প্রশংসাপত্র বাবদ ৫শত টাকা নেওয়া হচ্ছে । তবে কেউ এ রকম দিলেও তা নেওয়া হয়। এছাড়া তিনি শিক্ষার্থীর বাবার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করার অভিযোগ অস্বীকার করেন। এ প্রসঙ্গে বানারীপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্র্মকর্তা মোস্তফা আলম জানান, প্রশংসাপত্র প্রদান বাবদ কোন টাকা নেওয়ার বিধান নেই। কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তার নাম ভাঙ্গিয়ে টাকা নিলে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে বানারীপাড়া উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসায় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রশংশাপত্র ফি বাবদ বিভিন্ন অঙ্কের টাকা আদায় করার অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি সরকারী শিক্ষা আইনকে অবজ্ঞা করে স্কুলের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়তে ও বাধ্য করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ঐ স্কুলের কতিপয় শিক্ষকরা ছেলে- মেয়েদের একপর্যায়ে চাপের মূখে প্রাইভেটে যেতে বাধ্য করাচ্ছে এবং বিষয় প্রতি ৫০০/৬০০/৭০০ টাকা করে টিউশন ফি নিচ্ছে। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের ও দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগী অভিভাবক বৃন্দ।