Monday, November 25, 2024
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
Homeবাংলাদেশব্যবসায়ী-শিক্ষার্থী সংঘর্ষ : গুলি ছুড়েছে পুলিশ

ব্যবসায়ী-শিক্ষার্থী সংঘর্ষ : গুলি ছুড়েছে পুলিশ

রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষে একাধিক ছাত্র আহত হয়েছেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পুলিশের গুলিতে অন্তত ১২ ছাত্র আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন আইসিইউতে ভর্তি। শিক্ষার্থীদের এমন অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছে পুলিশ। তাদের ভাষ্য, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও বা গুলি করা হয়নি। যথেষ্ট ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।’

এদিকে, সংঘর্ষের কারণে নিউমার্কেট এলাকায় যান চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। রাত সাড়ে ৩টার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে এবং শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা চলে গেলে যান চলাচলের জন্য দুই পাশের সড়ক খুলে দেওয়া হয়। সরেজমিনে দেখা যায়, সড়ক খুলে দেওয়া হলেও বিভিন্ন স্থানে মোটরসাইকেল এবং ফুটপাতে থাকা আসবাবপত্র পুড়তে দেখা যায়। এছাড়া ইট ও কাঁচের ভাঙা টুকরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় সড়কজুড়ে।

সংঘর্ষ শেষে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ‘ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা খেয়ে পুলিশ ক্যাম্পাসে হামলা চালিয়েছে। শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি করেছে তারা।’ ‘নিউমার্কেট থানা ও ডিএমপি রমনা বিভাগের পুলিশ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসিক হারে টাকা পেয়ে থাকেন। তাই তারা ব্যবসায়ীদের পক্ষ নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন।’

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ‘আমাদের ওপর বিনা কারণে যে হামলা হয়েছে তার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আগামীকাল (মঙ্গলবার) সকালে আমরা নিউমার্কেটের সড়ক বন্ধ করে দেব। কোনো দোকান খুলতে দেব না।’

শিক্ষার্থীদের এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘তিনজন শিক্ষার্থী নিউমার্কেটের একটি দোকানে কেনাকাটা করতে যান। দাম নিয়ে ওই দোকানির সঙ্গে তাদের ঝগড়া হয়। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দোকানদার ও তার লোকজন তাদের মারধর করে। পরে শিক্ষার্থীরা হলে এসে বিষয়টি জানায়। হলের শিক্ষার্থীরা একযোগে নিউমার্কেটের গেট ভেঙে ওই দোকানদারকে মারতে যান। খবর পেয়ে আমরা তাদের বাধা দেই এবং চলে যেতে বলি।’

‘আমাদের কথা শুনে শিক্ষার্থীরা পিছু হটলেও দোকানিরা সড়কে চলে আসেন। এরপর দুইপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। আমরা শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের মাঝে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি এবং দুইপক্ষকে নিজ নিজ অবস্থানে ফিরে যেতে বাধ্য করি। এরপর শিক্ষার্থীরা আবার সড়কে অবস্থান নেন। পরে তাদের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টির মীমাংসা করা হয়। শিক্ষার্থীরা রাত সাড়ে ৩টার দিকে যার যার হলে চলে যান।’

‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি করেছে এবং সেই গুলিতে শিক্ষার্থীরা আহত হয়েছেন’— এমন অভিযোগের বিষয়ে রমনার ডিসি বলেন, ‘আমরা কোনো গুলি করিনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১০০ রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করেছি। আমাদের ৭-৮ জন সদস্য আহত হয়েছেন।’ শিক্ষার্থীরা হুমকি দিয়েছেন, আজ (মঙ্গলবার) মার্কেট খুলতে দেবে না। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিষয়টির মীমাংসা হওয়া প্রয়োজন। রমজানে মার্কেট বন্ধ থাকবে— এমন তো হতে পারে না। মার্কেট বন্ধ করতে দেওয়া হবে না।’

এদিকে, গুলি করার বিষয়টি অস্বীকার করলেও দুই শিক্ষার্থী যে রাবার বুলেটের আঘাতে আহত হয়েছেন— বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ বিষয়ে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘সংঘর্ষ চলাকালীন ১০ থেকে ১৩ শিক্ষার্থীকে আহত অবস্থায় এখানে আনা হয়। তাদের মধ্যে দুই শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ ছিলেন। পরে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাকি শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়।’

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে ঢাকা কলেজের দুই শিক্ষার্থী আহত হন। জরুরি বিভাগে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে আইসিইউতে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’ পরে ওই শিক্ষার্থীকে বেসরকারি গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments