পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথম নারী হিসেবে ২০১১ সালে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন হিনা রাব্বানী খার। মাত্র ৩৩ বছর বয়সে মন্ত্রী হয়ে শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন এই সুদর্শনী। সেই হিনা আবারও মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন। পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির এ রাজনীতিবিদ। তাকে দেওয়া হয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব।
পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি তার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। নতুন মন্ত্রিসভায় থাকা না থাকা নিয়ে এতদিন বেশ আলোচনায় ছিলেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। তবে শেষ পর্যন্ত প্রথম ধাপের মন্ত্রিপরিষদে শপথ নেননি তিনি।
মঙ্গলবার আইন-ই-সদরে আয়োজিত শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও শপথগ্রহণ করেননি বিলাওয়াল। ব্রিটেন সফর থেকে ফিরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার কথা রয়েছে তার। পিএমএল-এন ও পিপিপির মধ্যে কিছু সুনির্দিষ্ট বিষয়ের সুরাহা হওয়ার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে বিলাওয়াল শপথ নিতে পারেন বলে পাকিস্তানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে।
এ জন্য মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়ার আগে পিএমএল-এনের সর্বোচ্চ নেতা নওয়াজ শরিফের সঙ্গে লন্ডনে তিনি দেখাও করতে পারেন। মঙ্গলবার শপথ অনুষ্ঠান শেষেই ব্রিটেন সফরে রওনা হন বিলাওয়াল। মন্ত্রিসভায় বিলাওয়ালের যোগদানের বিষয়টি ঝুলে থাকলেও মঙ্গলবারই নিজের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন হিনা রাব্বানি। পিপিপি সরকারে থাকার সময় ২০১১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে উচ্চতর পড়াশোনা করে আসা হিনা রাব্বানি পাকিস্তানের রাজনীতিতে আসেন পাকিস্তান মুসলিম লিগের (কায়েদে আজম) মাধ্যমে। তবে কয়েক বছরের মধ্যেই দল পাল্টে তিনি পাকিস্তান পিপলস পার্টিতে (পিপিপি) চলে আসেন। পিপিপি সরকার আমলেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি। হিনা রাব্বানি তার কাজকর্মের মাধ্যমেও আলোচনায় এসেছিলেন। তিনি ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য জোর দিতেন।
পাকিস্তানের গণমাধ্যম জিও নিউজকে একবার হিনা বলেছিলেন, যুদ্ধ করে কাশ্মীর জয় করা সম্ভব নয়। তিনি প্রায়ই বলতেন ভারতের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যাগুলোর সমাধান করা যাবে। দায়িত্বগ্রহণের পর প্রথম কার্যদিবসে মঙ্গলবার নতুন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে ব্রিফ করেন পররাষ্ট্র সচিব সোহাইল মাহমুদ।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, নতুন সরকারের অধীন পররাষ্ট্রনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সরকারের আমলে পশ্চিমাবিশ্ব, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সম্পর্ক মেরামতের ওপর জোর দেওয়া হবে।