বেশ কিছুদিন ধরে ভারতে হিজাব বিতর্ক চলছে। এর মধ্যেই ঘটছে নিত্য নতুন ঘটনা। এবার হিজাব পরে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ায় পরীক্ষাই দিতে পারলেন না দুই শিক্ষার্থী। হলেই ঢুকতে দেওয়া হয়নি তাদের। শুক্রবার (২২ এপ্রিল) কর্ণাটক বোর্ডের দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পরীক্ষার আগেই রাজ্যটির শিক্ষামন্ত্রী বি সি নাগেশ জানিয়ে দিয়েছিলেন, কোনো পরীক্ষার্থী হিজাব পরে এলে তাকে হলে ঢুকতে দেওয়া হবে না। সব শিক্ষার্থীকে পোশাকবিধি মেনেই পরীক্ষাকেন্দ্রে যেতে হবে। অনেক মুসলিম ছাত্রী পরে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আবেদন করলেও সরকার তাতে সাড়া দেয়নি। এরপরও আলিয়া আসাদি এবং রেশম নামের ওই দুই ছাত্রী হিজাব পরে পরীক্ষা দিতে যান। তারা হিজাবপন্থী আন্দোলনের প্রথম সারির মুখ বলে জানা গেছে।
তারা আজ পরীক্ষাকেন্দ্রে হাজির হলে পর্যবেক্ষকরা জানান, পোশাকবিধি না মানলে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে না। প্রায় ৪০-৪৫ মিনিট ওই দুই পরীক্ষার্থী কর্তৃপক্ষকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। তাতেও মন গলেনি। শেষ পর্যন্ত নীরবে পরীক্ষাকেন্দ্র ত্যাগ করে ফিরে যান তারা। কর্ণাটক সরকার গত ৫ ফেব্রুয়ারি একটি নির্দেশনা জারি করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। তারপর থেকেই ওই রাজ্যে হিজাব ইস্যুতে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিশেষ করে উদুপি জেলায় বিক্ষোভের জেরে স্কুল-কলেজগুলো রীতিমতো রণক্ষেত্রের আকার ধারণ করেছিল। টানা প্রতিবাদের জেরে বেশ কয়েকদিন স্কুল-কলেজ বন্ধও রাখতে হয় কর্ণাটক সরকারকে।
সরকারের সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে আবেদন করেন কয়েকজন মুসলিম শিক্ষার্থী। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধ করা যাবে না- এই মর্মে একাধিক মামলা হয়েছিল। সেই মামলাকারীদের মধ্যে অন্যতম আলিয়া আসাদি ও রেশম। এবার তারা নিজেরাই পরীক্ষা দিতে পারলেন না।
আলিয়া-রেশমদের করা মামলার ভিত্তিতেই কর্ণাটক হাইকোর্ট ১৫ মার্চ রায় দেয়। আদালত জানায়, ইসলাম ধর্মাচরণে হিজাব অপরিহার্য নয়। শিক্ষাঙ্গনে হিজাব নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে যেসব আবেদন করা হয়েছিল তাও খারিজ করে দেওয়া হয়। এরপর সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হলেও সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আসেনি। শীর্ষ আদালত কর্ণাটক সরকারের আদেশে স্থগিতাদেশ দেয়নি।