পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনায় সিলেটের জাফলংয়ে পর্যটক কমেছে। শুক্রবার মাত্র হাজার খানেক পর্যটককে জাফলংয়ে আনন্দ-উচ্ছ্বাস করতে দেখা গেছে। অথচ বিগত তিনদিন জাফলংয়ে পর্যটকের উপস্থিতি ছিল আজকের তুলনায় প্রায় ৫০ গুণ বেশি। প্রকৃতিকন্যা খ্যাত জাফলং পর্যটনকেন্দ্রে টিকিট কাটাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার অতর্কিত হামলার শিকার হন ঢাকার কয়েকজন পর্যটক। ঘটনার পরপরই কঠোর পদক্ষেপ নেয় জেলা ও পুলিশ প্রশাসন। হামলাকারী পাঁচজন স্বেচ্ছাসেবককে আটক করা হয়। তারপরও এ ঘটনায় পর্যটক উপস্থিতিতে প্রভাব পড়েছে জাফলংয়ে।
তবে সিলেট জেলার অন্য সব পর্যটনকেন্দ্রে ভিড় দেখা গেছে। শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় ঈদের আমেজ এখনো কাটেনি। ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর আর বিছনাকান্দিতে পর্যটকদের ভিড় অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
গোয়াইনঘাটের জাফলং থেকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সবুজ পাহাড় আর পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝরনা ধারা সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করে পর্যটকদের। এছাড়া বিছনাকান্দি, জৈন্তাপুরের সারি নদী, কোম্পানিগঞ্জের সাদাপাথর, উৎমাছড়া এবং মিঠাপানির একমাত্র জলারবন রাতারগুলের সবুজের সমারোহে পর্যটকদের ভিড় থাকে সবসময়ই।
ভৈরব থেকে সিলেটে ঘুরতে আসা নুসরাত ফারিয়া বলেন, ‘যতবার সিলেট ঘুরতে আসি ততবারই জাফলং ঘুরতে আসি। আজও এলাম। তবে শুনেছি বৃহস্পতিবার এখানে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। তবে আজ আর সেই পরিবেশ নেই। ট্যুরিস্ট পুলিশের উপস্থিতি আছে। তারা পর্যটকদের আনন্দ-বিনোদনে সহায়ক ভূমিকা রাখছেন। এতে আমি খুশি।’
ঢাকার সাভার থেকে জাফলংয়ে ঘুরতে আসা ব্যবসায়ী মামুন বারি বলেন, ‘সিলেটে ঘুরতে আসবো আসবো করে বিগত দুটি বছর করোনার সংক্রমণের কারণে আর আসা হয়নি। এবার স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে এসে অনেক ভালো লাগছে।’
তিনি বলেন, ‘সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলো দেশের অন্য পর্যটন এলাকাগুলো থেকে একটু আলাদা। তাই এখানে ঘুরতে এলে ভালোই লাগে।’ স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী নাজমুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার পর্যটকদের ওপর হামলার পর শুক্রবার জাফলংয়ে পর্যটকের সংখ্যা কমেছে। বিগত তিনদিন জাফলংয়ে লোকে লোকারণ্য থাকলেও আজকের চিত্র একটু ভিন্ন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ জাফলং জোনের ওসি রতন শেখ বলেন, ‘জাফলংয়ে পর্যটকদের সংখ্যা এ বছর বেড়েছে। আজ শুক্রবারও পর্যটক ঘুরতে এসেছেন। পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্যুরিস্ট পুলিশ আন্তরিকভাবে কাজ করছে।’
এদিকে, বৃহস্পতিবার পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনায় আটক পাঁচজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আজ বিকেলে সিলেটের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।