খালেদ মাসুদ রনি:
লন্ডন শহরের টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল নির্বাচনে শেষ হলে এখনো রেশ কাটেনী।বাংলাদেশী অধ্যুষিত এ এলাকা লেবারের ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত।যে কোন ভাবে লেবার দলের টিকেট নিশ্চিত করতে পারলেই এখানে কাউন্সিলার হওয়া অতি সহজ।এমন পরিস্থিতিতে ৫ মে নির্বাচন মানুষের সকল হিসেব-নিকেশ উল্ট-পাল্ট করে দিয়ে গেছে।৬ মে নির্বাচনের ফলাফলে দেখা যায় লেবারের দুর্গে এস্পায়ার হানা দিয়ে মেয়রস ২৪ টি সিট হাতিয়ে নিতে সক্ষম হয়।সারা দেশে লেবারের জয়জয়কার আর কনজাবেটিবের ভরাডুবি হলেও এখানে তার উল্টো ঘটনা ঘটেছে।তাদের দূর্গ হিসাবে পরিচিত বারায় লেবার পার্টির ভরাডুবি হয়েছে।দলটি মেয়র পদ হারানোর পাশাপাশি কাউন্সিলার পদেও সংখ্যা গরিষ্ঠতা হারিয়েছে।শুরুর দিকে লেবারের অবস্থান শক্ত হলেও সময়ের সাথে সাথে পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকে।ভোটের তিনদিন আগ থেকে পরিস্থিতি অন্য ভাবে মোড় নেয়।তারা তা আচ করতে পারেনী।
তখনও লেবার আত্মতৃপ্তি নিয়ে ঘুরছিলো।আত্মতৃপ্তিই তাদের জন্য কাল হয়ে দাড়ায়।এছাড়াও নেতাদের মধ্যে বিরোধ,দলের একাধিক প্রার্থী থাকলেও অপ্রকাশ্য নিজে পাশ করার জন্য গোপনে কাজ করাই নির্বাচনে মেয়র লুৎফুর রহমানসহ তার দলের কাউন্সিলারদের বিস্ময়কর উত্তানে সহযোগীতা করে।নিজেদের(লেবারের)কিছু ভূলের কারণে একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে ক্যাবিনেট গঠন করতে যাচ্ছেন মেয়র লুৎফুর রহমান।৫ মে বৃহস্পতিবারের ফলাফল অনুযায়ী টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলে এস্পায়ার পার্টি পেয়েছে ২৪টি সিট, লেবার পার্টি ১৯টি, কনজাবেটিব ১টি ও গ্রীণ পার্টি ১ পেয়েছে।তবে লেবার পার্টি পরাজিত হলেও টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলে কাউন্সিলার পদে বাংলাদেশীদের জয় জয়কার।৪৫টি সিটের ৩৭টিতেই বাংলাদেশীরা বিজয়ী হয়েছেন।এর মধ্যে বেশীর ভাগ সিলেটি রয়েছেন।
এদিকে,সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে দুই-দুইবারের মেয়র জন বিগসকে পরাজিত করে তৃতীয়বারের মত মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন নতুন দল এস্পায়ার পার্টির বাংলাদেশী লুৎফুর রহমান।নির্বাচনে লুৎফুর রহমান পেয়েছেন ৪০ হাজার ৮০৪ ভোট, লেবার পার্টির জন বিগস পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৪৮৭ ভোট।আর লিবডেম প্রার্থী রাবিনা খান পেয়েছেন প্রায় সাড়ে ছয় হাজার ভোট।টাওয়ার হ্যামলেটসে কাউন্সিলার পদে পূর্ণাঙ্গ ফলাফল হচ্ছে বেথনালগ্রীণ ইস্ট ওয়ার্ড থেকে লেবার পার্টির সিরাজুল ইসলাম, রেবেকা সুলতানা, এস্পায়ার পার্টির আহমদুল কবির, বো ইস্ট থেকে লেবার পার্টির আমিনা আলী, রিসেল ন্যান্সি ব্লাকি, মার্ক ফান্সিস, বো ওয়েস্ট থেকে লেবার পার্টির আসমা বেগম, গ্রীণ পার্টির নাথালি সিলভিয়া বিনফাইট, ব্রমলি নর্থ ওয়ার্ড থেকে এস্পায়ার পার্টির মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন খালেদ, আব্দুল মান্নান, ব্রমলি সাউথ ওয়ার্ড থেকে এস্পায়ার পার্টির বদরুল ইসলাম চৌধুরী, লেবার পার্টির শাহবীর হোসেন।
ক্যানারি ওয়ার্ফ থেকে এস্পায়ার পার্টির সাইদ আহমদ, মোহাম্মদ মাইয়ুম মিয়া তালুকদার, আইল্যান্ড গার্ডেন থেকে লেবার পার্টির মুফিদাহ বুস্টিন, কনজার্বেটিভ পার্টির পিটার স্টেসি গোল্ডস, লেন্সবারী ওয়ার্ড থেকে এস্পায়ার পার্টির আবুল মনসুর ওহিদ আহমদ, জাহেদ চৌধুরী, ইকবাল হোসেন, লাইম হাউজ ওয়ার্ড থেকে লেবার পার্টির জেমস রবার্ট ভেনেবলস কিং, মাইলএন্ড ওয়ার্ড থেকে লেবার পার্টির লিলু আহমদ, মোহাম্মদ সাইফুর রহমান চৌধুরী, সাবিনা খান, পপলার ওয়ার্ড থেকে এস্পায়ার পার্টির গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী, শেডওয়েল ওয়ার্ড থেকে এস্পায়ার পার্টির আনা মিয়া, মোহাম্মদ হারুন মিয়া, স্পিটালফিল্ডস এন্ড বাংলাটাউন ওয়ার্ড থেকে এস্পায়ার পার্টির সালুক আহমদ, কবির হোসেন, সেন্ট ডানস্টন ওয়ার্ড থেকে লেবার পার্টির মাইশা ফাহমিদা বেগম, আয়াস মিয়া, সেন্ট ক্যাথরিনস এন্ড ওয়াপিং ওয়ার্ড থেকে লেবার পার্টির এ্যামি লুইস লি, এম এ উল্লাহ, স্টেপনি গ্রীণ ওয়ার্ড থেকে লেবার পার্টির সাবিনা আকতার, এস্পায়ার পার্টি থেকে মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহিদ আলী, উইভার্স ওয়ার্ড থেকে এস্পায়ার পার্টির কবির আহমদ, লেবার পার্টি থেকে আসমা ইসলাম, হোয়াইটচ্যাপেল ওয়ার্ড থেকে ফারুক মাহফুজ আহমদ, এস্পায়ার পার্টি থেকে সফি উদ্দিন আহমদ, মোহাম্মদ কামরুল হোসেন।এবারের নির্বাচনে ২ লক্ষ ৫ হাজার ১শত ৮৯ ভোটার নাম তালিকা ভূক্ত করে ছিলেন।এর মধ্যে ভোট প্রয়োগ করেছেন ৮৬ হাজার ৯ জন।এর মধ্যে ১ হাজার ৮ শত ৬৪ ভোট বাতিল হয়ে যায়।