চা ছাড়া একটি দিনও কাটানো সম্ভব নয় অনেকের ক্ষেত্রেই। দিনের শুরু থেকে সন্ধ্যার নাস্তায়, আড্ডায়, কাজের চাপে, ক্লান্তিতে চা আমাদের নিত্যসঙ্গী। আর এই চা তৈরির পরে চা পাতা কী করেন? নিশ্চয়ই ফেলে দেন। ফেলে না দিয়ে ব্যবহৃত চা পাতা অনেক কাজে লাগানো সম্ভব।
আসুন জেনে নিই ব্যবহৃত চা পাতা যেসব কাজে লাগে-
সার হিসেবে
চায়ের পাতা সার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। অনেকেই গোলাপ গাছে চায়ের পাতা সার হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন। আরও অনেক গাছে এটির ব্যবহার করা যেতে পারে। অফিসের টেবিলে টবে থাকা গাছের গোড়ায়ও এই পাতা ব্যবহার করতে পারবেন। বিশেষ করে ইনডোর প্ল্যান্টের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা চা পাতা সার হিসেবে অত্যন্ত উপযোগী।
বাথ টি
ব্যবহার করার পর বাথটবে আপনার গোসলের পানিতে কয়েকটি টি ব্যাগ রেখে দেওয়া যেতে পারে। একে ‘বাথ টি’ বলে। সেই পানিতে গোসল করলে অনেক বেশি সতেজ লাগবে। টি বাথ নিলে ত্বকের ঔজ্জ্বল্যও অনেকটা বাড়ে। চুলের জন্যও এই বাথ টি বেশ ভালো। অনেকেই এখন এই বাথ টি নিচ্ছেন।
চোখের আরাম
দীর্ঘক্ষণ রাত জেগে পড়াশোনা করলে বা কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করলে বা অন্য আরও অনেক কারণে কারও কারও চোখের নিচে কালি পড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে ঠান্ডা পানিতে টি ব্যাগ ভিজিয়ে তারপর সেটি যদি চোখের পাতার ওপর রেখে দেয়া যায়। মিনিট ২০ এটি চোখের ওপর দিয়ে রাখলে অনেকটা আরাম পাবেন। এর ফলে ক্লান্ত চোখে প্রাণ ফিরে আসবে এবং নিয়মিত ব্যবহার করলে চোখের নিচের কালি দূর হবে।
ত্বকের কালো ভাব দূর করতে
চায়ে উপস্থিত টনিক এসিড ত্বকের কালো ভাব দূর করতে সাহায্য করে। এজন্য ব্যবহার করা চা পাতা আধঘণ্টা আক্রান্ত স্থানে ধরে রাখতে হবে। এ ছাড়া রোদে ত্বক পুড়ে গেলেও সরাসরি টি ব্যাগ মুখে ব্যবহার করতে পারেন।
কাপড় ভালো রাখতে
আলমারিতে অনেক দিন ধরে কাপড় রাখলে পুরোনো কাপড়ের গন্ধ সৃষ্টি হয়। ব্যবহার করা চা পাতা যদি একটি টিস্যু পেপারে মুড়িয়ে আপনি আলমারিতে রেখে দেন, তাহলে কাপড়গুলো ভালো থাকবে। পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকেও রেহাই পাবে।
জুতার যত্ন
জুতায় ঘামের দুর্গন্ধ অনেকেরই সমস্যা। প্রতিদিন বাইরে থেকে এসে দুটি টিস্যু পেপারের মধ্যে চা পাতা মুড়ে সকাল পর্যন্ত জুতায় রেখে দিন। গন্ধ হবে না।
কন্ডিশনার হিসেবে
বাড়িতেই তৈরি করে নিতে পারেন চুলের যত্নে প্রয়োজনীয় কন্ডিশনার। চা পাতা অনেকটা সময় জ্বাল দিয়ে গাঢ় ও ঘন লিকার তৈরি করে নিন। শ্যাম্পু করার পর চুলে ভালো করে লাগিয়ে নিন ও ৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। চাইলে পানি দিয়ে হালকা করে ধুয়ে নিতে পারেন, না ধুলেও সমস্যা নেই। চুল হয়ে উঠবে ঝকঝকে, মোলায়েম। এর সুবিধা হলো যেকোনো ধরনের চুলেই ব্যবহারযোগ্য।
কার্পেট পরিষ্কার করতে
আধা ভেজা ব্যবহৃত চা পাতা কার্পেটে ছড়িয়ে দিন। সম্পূর্ণ শুকিয়ে গেলে পরিষ্কার করে ফেলুন বা ভ্যাকুয়াম ক্লিন করে নিন। বাজে গন্ধ ও ময়লা গায়েব হয়ে যাবে।
পা পরিষ্কার করতে
শীতে পায়ের পাতা, গোড়ালি ময়লা হয় সহজে। ব্যবহার করা চা পাতা গরম পানিতে ঢেলে পা চুবিয়ে রাখুন, পায়ের সব ময়লা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
কেটে গেলে
শেভ করতে গিয়ে মুখ কেটে গেছে? একটা ব্যবহূত টি ব্যাগ ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে কাটা স্থানে লাগিয়ে রাখুন। আরাম তো পাবেনই, রক্তপাতও বন্ধ হবে।