পাকিস্তানে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা মোকাবিলা করছে। বিধ্বংসী এই বন্যায় দেশটিতে ইতোমধ্যেই মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে সাড়ে ১২শ। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আরও ‘বেশি পরিমাণে মানবিক সহায়তা’ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছে পাকিস্তান।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। এতে বলা হয়েছে, চলমান বিধ্বংসী বন্যায় পাকিস্তানে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১ হাজার ২৬৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং এই পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত ৩ কোটি ৩০ লাখ মানুষের জন্য বেশ বড় মানবিক সহায়তার আবেদন জানিয়েছেন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা মন্ত্রী আহসান ইকবাল।
পাকিস্তান অবশ্য ইতোমধ্যেই দুই দফায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সহায়তার আবেদন জানিয়েছে। ইসলামাবাদ সরকারের সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা ইতোমধ্যেই দেশটিতে মানবিক সহায়তাবাহী বিমান পাঠাতে শুরু করেছে। তবে এর মধ্যে দেশটি তৃতীয় দফায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে মানবিক সহায়তার আবেদন জানাল।
আলজাজিরা বলছে, মৃত্যু ও গৃহহীনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় পাকিস্তানের মানুষের দুর্দশার প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ বেড়েছে। প্রাথমিক সরকারি অনুমান অনুযায়ী, বৃষ্টি ও বন্যার কারণে পাকিস্তানের ১০ বিলিয়ন বা এক হাজার কোটি মার্কিন ডলারের ক্ষতি হয়েছে।
শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা মন্ত্রী আহসান ইকবাল বলেন, ‘বিধ্বংসী এই বন্যায় ধ্বংসের মাত্রা অনেক বেশি এবং ৩ কোটি ৩০ লাখ মানুষের জন্য বিশাল মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। এর জন্য আমি পাকিস্তানি নাগরিক, প্রবাসী পাকিস্তানি এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এই প্রয়োজনের সময়ে পাকিস্তানকে সাহায্য করার জন্য আবেদন করছি।’
বিশ্বের একাধিক কর্মকর্তা এবং বিশেষজ্ঞরা অস্বাভাবিক মৌসুমী বৃষ্টিপাত ও বন্যার পেছনে জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও একই ইঙ্গিত দিয়ে চলতি সপ্তাহের শুরুতে মারাত্মক সংকটের সময় বিশ্বকে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করতে পাকিস্তান যাবেন গুতেরেস।
এদিকে গত সপ্তাহে জাতিসংঘ এবং পাকিস্তান যৌথভাবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লাখ লাখ মানুষকে সাহায্য করার জন্য ১৬ কোটি মার্কিন ডলারের জরুরি তহবিল গঠনের জন্য আবেদন জানায়। এসময় বলা হয়, চলমান এই বন্যায় পাকিস্তানে ১০ লাখেরও বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বাংলাপেইজ/ এএসএম