মা মারা গেছেন। কিন্তু মরদেহ শ্মশানে নেওয়ার মতো কোনো ব্যবস্থা করতে পারেনি ছেলে। কাউকে ডাকলে কেউ আসেনি। তাই বাধ্য হয়ে হুইল চেয়ারে বসিয়েই মরদেহ শ্মশানে নেওয়া হলো। চেনা-পরিচিত, আত্মীয়-স্বজন কেউ খবর রাখেনি। বৃদ্ধ বাবাও চলাফেরা করতে পারেন না। আরও দুই ভাই থাকলেও তারা বাবা-মায়ের খবর রাখেন না। তাই মায়ের মরদেহ হুইল চেয়ারে বসিয়ে তিন কিলোমিটার দূরের শ্মশানে নিয়ে গেলেন ৬০ বছর বয়সী বড় ছেলে। এই ঘটনা ঘটেছে তামিলনাড়ুর ত্রিচি জেলায়।
পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি মুরুগানন্ধম। ৬০ বছরের ওই বৃদ্ধ জানান, গত বৃহস্পতিবার সকালে তার মা মারা যান। সোরিয়াসিসে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। মায়ের শেষকৃত্য করার জন্য কোনো বন্ধু-বান্ধব বা প্রতিবেশীকে পাননি ওই বৃদ্ধ। এমনকি তার ভাইয়েরাও আসেননি।
তাছাড়া শববাহী গাড়ি ভাড়া করার মতো আর্থিক সামর্থ্যও নেই তার। তাই মৃত মাকে কাপড়ে মুড়ে হুইল চেয়ারে বসান বৃদ্ধ। এভাবেই প্রায় তিন কিলোমিটার দূরের শ্মশানে নিয়ে যান তিনি।
মুরুগানন্ধম পৌরসভায় ফোন করে জিজ্ঞাসা করেছিলেন কোনো সহযোগিতা পাওয়া যাবে কি না। সেখান থেকে এক কর্মী জানিয়েছিলেন, শেষকৃত্যের জন্য অর্থ সাহায্য করা হবে। পাশাপাশি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থারও খোঁজ দেন ওই কর্মী। তবে সে সবই শ্মশানে যাওয়ার পর।
বৃদ্ধ জানান, তার মা রাজেশ্বরীর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। কয়েক বছর সোরিয়াসিসে ভুগছিলেন। বুধবার মায়ের শারীরিক পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে। চিকিৎসক জানিয়ে দেন, আর করার কিছু নেই। বৃহস্পতিবার ভোর ৪টার দিকে তার মৃত্যু হয়। মায়ের মরদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য হুইল চেয়ারই শেষ পর্যন্ত তার ভরসা হয়ে ওঠে। শ্মশানে যাওয়ার পরে অবশ্য পৌরসভার কর্মীরা তাকে সাহায্য করেছেন। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও এগিয়ে এসেছে।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
বাংলাপেইজ/এএসএম