Wednesday, October 23, 2024
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
Homeআন্তর্জাতিকনারীদের বিয়েবিচ্ছেদ বাড়ছে পাকিস্তানে

নারীদের বিয়েবিচ্ছেদ বাড়ছে পাকিস্তানে

ডিভোর্স বা বিয়েবিচ্ছেদ পাকিস্তানি নারীদের জন্য একটি সামাজিক ট্যাবু। তারপরেও দেশটিতে নিজে বিয়েবিচ্ছেদ ঘটিয়েছেন এমন নারীর সংখ্যা বাড়ছে। অধিকারকর্মীরা বলছেন, পাকিস্তানের পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় নারীদের পক্ষ থেকে বিয়ে ভেঙে দেওয়ার বিষয়টি মূলত নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া এবং দাম্পত্য জীবনে নিগ্রহের শিকার হওয়ার বাস্তবতা তুলে ধরছে। খবর ডয়েচে ভেলের।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে বিয়েবিচ্ছেদের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ বা পরিচালনার জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। তাই নারীরা বিয়েবিচ্ছেদের জন্য আবেদন করতে না পারলেও শরিয়া আইন অনুযায়ী স্বামীর অনুমতি ছাড়া বিয়ে ভেঙে দিতে পারেন।

পাকিস্তানে বিয়ে ভেঙে দেওয়ার এই রীতিকে বলা হয় ‘খুলা’। এটি সাধারণত পারিবারিকভাবে হয়ে থাকে। অর্থাৎ, পারিবারিক আদালত বসিয়ে এ ধরনের ঘটনায় মীমাংসা করা হয়।তবে বিয়ে ভেঙে দেওয়া বা খুলার আবেদনের জন্য নারীদের সুনির্দিষ্ট কারণ দেখাতে হয়। যেমন- নির্যাতন, স্বামীর চলে যাওয়া, স্বামীর মানসিক রোগ ইত্যাদি।

পাকিস্তানে কতজন নারী এভাবে বিয়ে ভেঙে দিয়েছেন তার সুনির্দিষ্ট সংখ্যা জানা না গেলেও তাদের সংখ্যা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ২০১৯ সালে গালাপ অ্যান্ড গিলানি পাকিস্তান নামে একটি সংগঠনের জরিপে দেখা গেছে, দেশটির ৫৮ মানুষ বিশ্বাস করেন, সেখানে বিয়েবিচ্ছেদের সংখ্যা বাড়ছে। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের প্রতি পাঁচজনের দুজন মনে করেন, শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কারণেই বেশিরভাগ সময় এমন বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে।

স্বাধীনতা চান নারীরা
এক বছর আগে বিয়েবিচ্ছেদ ঘটিয়েছেন দুই সন্তানের মা সাজিয়া। দাম্পত্য জীবনে নির্যাতনের শিকার হতেন বলে দাবি তার। শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলেও রান্নায় পারদর্শী সাজিয়া নিজে খাবার সরবরাহের ব্যবসা করেন। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পরেই বিয়েবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন ৪১ বছর বয়সী এ নারী।

সাজিয়া বলেন, রান্নার ব্যবসা দাঁড়িয়ে যাওয়ার পর বুঝলাম, আমি অর্থনৈতিক ও মানসিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছি। আর তারপর বিয়েবিচ্ছেদ করি।

নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা আইনজীবীরা বলছেন, পাকিস্তানে ‘খুলা’র আবেদন করা বা বিয়েবিচ্ছেদ করা নারীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।

মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস প্রোটেকশন সেন্টারের অ্যাটর্নি আতিকা হাসান রাজা বলেন, পাকিস্তানি নারীরা ধীরে ধীরে বুঝতে পারছেন যে, শারীরিক আঘাত ছাড়াও মানসিক নির্যাতনের মতো নানা কারণে বিয়েবিচ্ছেদ করা যেতে পারে।

তিনি বলেন, নারীদের পক্ষ থেকে বিয়েবিচ্ছেদ চাওয়ার ক্ষেত্রে যেহেতু পারিবারিক রীতি মেনে নেওয়ার বিষয় জড়িত, তাই ‘খুলা’র জন্য প্রয়োজনীয় পারিবারিক আদালতের সংখ্যাও বাড়ছে।

মোমিন আলি খান নামে আরেক আইনজীবী বলেন, শিক্ষিত ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী নারীরাই সাধারণত বিয়েবিচ্ছেদ বা ‘খুলা’র জন্য আবেদন করে থাকেন। তার মতে, সামাজিক-অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা গ্রামের নারীদের জন্য নিজের ইচ্ছায় বিয়ে ভেঙে দেওয়া অনেক কঠিন। কারণ, জীবনযাপনের জন্য তাদের অর্থনৈতিক সহায়তা দরকার।।

বাংলাপেইজ/এএসএম

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments