প্রকৃতপক্ষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল, তার নেত্রী খালেদা জিয়া ও তাদের দল হৃদয়ে যে পাকিস্তানকেই লালন করে সেটির নগ্ন বহিঃপ্রকাশ তিনি মুখ ফসকে বলে ফেলেছেন বলে মন্তব্য বলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ চায় বিএনপিসহ সবদল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। কিন্তু তারাই নির্বাচন থেকে পালিয়ে যায়। ২০১৮ সালেও তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার কথা বলেও আবার অংশগ্রহণ করেছিল। আগামী নির্বাচনেও তারা প্রস্তুতি নিয়ে অংশগ্রহণ করুক সেটিই আমরা চাই।
কিন্তু তারা আন্দোলনের নামে যেভাবে আবার নিজেরা নিজেরা মারামারি করছে, পুলিশের ওপর আক্রমণ করছে, আবার পেট্টোলবোমা সন্ত্রাসীদের মাঠে নামিয়েছে, এজন্য জনগণই তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলছে।
বাংলাদেশ এখন পাকিস্তানের চেয়েও খারাপ পর্যায়ে চলে গেছে, পাকিস্তানই ভালো ছিল মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা এতদিন ধরে যে কথা বলে আসছিলাম, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব, তাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তার দল হৃদয়ে পাকিস্তানকেই যে লালন করে, সেটি মুখ ফসকে গতকাল তার মুখ দিয়ে বেরিয়ে এসেছে। তারা যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না সেটিরই বহিঃপ্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, যেখানে আমরা অর্থনৈতিক, সামাজিক, মানব উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসহ সমস্ত সূচকে পাকিস্তানকে ২০১৫ সালে অতিক্রম করেছি। আমাদের মাথাপিছু আয় পাকিস্তানের চেয়ে অনেক বেশি বটেই, এমনকি ভারতের চেয়েও বেশি। আমরা ২০০৯ সালে সরকার গঠন করার আগে দারিদ্রসীমার হার বাংলাদেশে ৪১ শতাংশ ছিল, এখন সেটি ২০ শতাংশে নেমেছে। মাথাপিছু আয় তিন হাজার ডলারের ওপরে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষের গড় আয়ু ৬৩ বছরের বেশি।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানও সেটি স্বীকার করে। আমরা যে পাকিস্তানকে ফেলে অনেক দূর এগিয়ে গেছি সেটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে পাকিস্তানের সাবেক ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রীসহ রাজনীতিবিদরা স্বীকার করে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব গতকাল ঠাকুরগাঁও গিয়ে বললেন পাকিস্তানই ভালো ছিল।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা সবসময় চাই বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। কিন্তু ২০১৪ সালে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার পরিবর্তে তারা নির্বাচনকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেছিল। পাঁচশ নির্বাচনী ভোটকেন্দ্র স্কুলঘর জ্বালিয়ে দিয়েছিল। শিশু-কিশোরদের বই জ্বলিয়ে দিয়েছিল।
তিনি বলেন, আমরা চাই তারা পুলিশের ওপর ও জনগণের ওপর হামলার পরিবর্তে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করুক। তারা যেখানে নিয়মতান্ত্রিকভাবে সমাবেশ করে সেখানেতো পুলিশ কখনো বাধা দেয়না।
যেখানে তারা সন্ত্রাসীদের মাঠে নামিয়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ পরিচালনা করছে, সেখানে পুলিশকে আত্মরক্ষার্থে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়েছে। জনগণও তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।
জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনে আলাদা নির্বাচন করবে জিএম কাদেরের এমন ঘোষণার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি বলেছেন ‘তারা কোন জোটে নেই’ তিনি সঠিকই বলেছেন।
গতবারও তারা আমাদের সঙ্গে জোটবদ্ধ নির্বাচন করেনি। ২০০৯ সালে আমরা তাদের সঙ্গে জোটবদ্ধ নির্বাচন করেছিলাম। ২০১৮ সালে আমাদের সাথে তাদের স্ট্র্যাটেজিক্যাল অ্যালায়েন্স ছিল।
বাংলাপেইজ/এএসএম