বিয়ে করলেন বাংলাদেশ জাতীয় হকি দলের তারকা ডিফেন্ডার এবং একই সঙ্গে নৌবাহিনীর চৌকষ ও সুদক্ষ খেলোয়াড় রাজশাহীর ছেলে ফরহাদ আহমেদ শিতুল। জান্নাতুল ফেরদৌস সোমাকে নিয়ে জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু করলেন তিনি। পারিবারিক পছন্দে এবং বর-কনের দু’পক্ষের আত্মীয়, বন্ধু-স্বজন, শুভাকাঙ্ক্ষীদের উপস্থিতিতে শনিবার রাজশাহীর একটি কনভেনশন সেন্টারে শিতুল-সোমার বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। শিতুলের সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী সোমাও রাজশাহীর মেয়ে। সোমা উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে এখন অনার্সে ভর্তির অপেক্ষায়।
হকি খেলা সম্পর্কে মোটেও ধারণা ছিল না সোমার। শিতুলের সঙ্গে যখন থেকে বিবাহের কথা-বার্তা শুরু তখন থেকেই হকির খোঁজ রাখা। এখন নাকি খেলাটা ভালোই বোঝেন। খেলোয়াড়কে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেয়া- বিয়ে করা প্রসঙ্গে সোমা জানান, `শিতুল জাতীয় হকি দলের সেরা খেলোয়াড়দের একজন। আর এটা আমি পত্র-পত্রিকা পড়ে জেনেছি। তাছাড়া কদিন আগেই ফ্রাঞ্চাইজি হকি লিগ শেষ হলো। সেখানে শিতুলদের টিম একমি চট্টগ্রাম চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। টিভিতে আমি সেটা দেখেছি। আগে আমি হকি খেলাটা মোটেও বুঝতাম না। এখন অনেকটাই বুঝি। আমি বলব আমি শুধু দেশের একজন সেরা হকি খেলোয়াড়কেই বিয়ে করিনি, সেরা একজন মানুষকে, ভালো একজন মানুষকে বিয়ে করেছি। সবাই আমাদের নতুন জীবনের জন্য দোয়া করবেন। যেন আমরা সুখী হতে পারি।’
খুবই শান্ত এবং লাজুক প্রকৃতির ছেলে ফরহাদ আহমেদ শিতুল। ক্রীড়াঙ্গনে সকলেরই পছন্দের। আত্মীয়-স্বজন বন্ধু মহলেও তার সুনাম সর্বজনবিদিত। নববধূ সোমার সঙ্গে পরিচয়ের কথা উল্লেখ করে শিতুল জানান, “৬ মাস আগেই পারিবারিকভাবে দুজনের দেখা-সাক্ষাৎ, বিয়ের আলোচনা।
প্রথমে আমার পরিবারের লোকেরা বিশেষ করে আমার বোন তাকে পছন্দ করেন। আমার বাবারও তাকে পছন্দ হয়। বাবা বলেন, সোমার হাতের বানানো চা নাকি খুবই সুস্বাদু। এরপর আমি তাকে দেখতে আসি। আমারও তাকে ভীষণ পছন্দ হয়। আর এভাবেই পারিবারিক আলোচনা, দু’পক্ষের দেখা-সাক্ষাৎ থেকেই আজকে বিয়ে।”
খেলোয়াড়দের ব্যস্ত জীবন। খেলার প্রয়োজনে বছরের অনেকটা সময় ক্যাম্পে, খেলার মাঠে, এমনকি দেশের বাইরেও থাকতে হয়। এসব বিষয়ে শিতুলের নববধূ কতটা অবগত। জবাবটা শুনুন শিতুলের মুখেই, “আমাদের পরিচয়টা যেহেতু দীর্ঘ ছয় মাস আগে হয়েছে, সেহেতু আশাকরি আমার খেলোয়াড়ী জীবন-আচরণ সম্পর্কে ইতোমধ্যে তার মোটামুটি ধারণা হয়ে গেছে। আমাদের খেলোয়াড়ী জীবন কেমন, পাশাপাশি চাকরি জীবন আছে। আশাকরি সে (সোমা) সব কিছু মানিয়ে নিতে পারবে। সব ব্যাপারে সে খুবই ইতিবাচক। খুব ভালো একটা মেয়ে। আশাকরি আমাদের ভবিষ্যৎ জীবন ভালোই হবে।”
শুনেছি আপনার সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছেন। সামনে লেখাপড়া চালিয়ে যাবেন তো। এই প্রশ্নে শিতুলের সোজাসাপ্টা উত্তর, “আমার সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী যেহেতু উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে এখন অনার্সে ভর্তির অপেক্ষায়। আমি চাইব সে যেন লেখাপড়া কন্টিনিউ করে। কারণ শিক্ষিত জাতি গঠনে একজন শিক্ষিত মায়ের কোনই বিকল্প নেই। সে লেখাপড়া শিখলে তার সন্তানেরা অর্থাৎ আমাদের আগামী প্রজন্ম সুশিক্ষিত হিসেবে হিসেবে গড়ে উঠবে।”
দেশজুড়ে শিতুলের অনেক ভক্ত-সমর্থক, প্রিয়জন। বিয়ে করে নতুন জীবনে পা রেখেছেন শিতুল। প্রিয়জনদের উদ্দেশ্য কী বলবেন, “আমার আগের জীবনটা এক রকম ছিল; এখন আমি নতুন একটা জীবনে পা রেখেছি। বিয়ে মানেই জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায়ের সূচনা। আমার নতুন জীবনের জন্য সকলের কাছে দোয়া চাই। আমিও সকলের জন্য দোয়া করি। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।”
বাংলাপেইজ/এএসএম