সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় জায়গায় সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় মহিলাসহ গুরুতর আহত হয়েছে ৪ জন।
আহতরা হলেন, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের চলিতারডোবা গ্রামের ইদ্রিস আলী (৭৫), তার ছেলে কাজল মিয়া (৪৫), মাওলানা মুফতি মেরাজুল ইসলাম (৪২), মেরাজুল ইসলামের স্ত্রী নাজমুন নাহার(৩৫)।
আহত কাজল মিয়া, ইদ্রিস আলী ও মেরাজুল ইসলামকে উদ্ধার করে প্রথমে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত কাজল মিয়ারা অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট উসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। এবং আহত নাজমুন নাহারকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এ ঘটনাটি ঘটেছে আজ বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯ টার সময় উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের চলিতারডোবা গ্রামে।
ঘটনার খবর পেয়ে বিশ্বম্ভপুর থানার এস.আই অঞ্জন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এর সত্যতা নিশ্চিত করে ধনপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, সুলেমান ও ইদ্রিস আলীর মধ্যে জায়গায় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। সুলেমান খুবই খারাপ মানুষ। তার বিরুদ্ধে মার্ডার মামলাসহ আদালতে একাধিক মামলা রয়েছে। এর আগেও এই জায়গায় নিয়ে সুলেমান ও তার আত্নীয় স্বজনরা ইদ্রিস আলী ও তার ছেলেদের মারপিট করে। পরে ইদ্রিস আলী বাদি হয়ে সুনামগঞ্জ আদালতে একটি মামলা করেন। এই মামলা এখনো আদালতে চলমান আছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চলিতারডোবা গ্রামের আহত ইদ্রিস আলীর সাথে পার্শ্ববর্তী সলুকাবাদ ইউনিয়নের আমড়াগড়া গ্রামের মৃত সোলেমান মিয়া (৬০) এর জায়গায় জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে আজ বৃহস্পতিবার সকালে ইদ্রিস আলীর বসতবাড়ি লাগোয়া সুলেমানের থাকা জমির আইল কাটতে আসে। এসময় জমির আইল না কেটে সুলেমান ইদ্রিস আলী বসতবাড়ি জায়গা কাটতে থাকে। তা দেখে ইদ্রিস আলী ও তার ছেলে কাজল মিয়া ও মাওলানা মুফতি মেরাজুল ইসলাম তাদের বাড়ির জায়গা কাটতে নিষেধ করলে পূর্ব থেকেই দা, কিরিচ ও লোহার রড নিয়ে সুলেমানের ছেলে জাকির হোসেন (২০), মেয়ের জামাই সাইফুল (২৫), সোলেমানের বোনজামাই খাইরুল ইসলাম (৬০), খাইরুলের ছেলে সাদিকুল (৩৮), মজিবুর (৩৫), হাবিবুর (৩৩), জিয়াবুর (২৮), তৈবুর (৩২) ও ভাগ্না রতন (৪৫) সহ ১৫/১৬ জনে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ ইদ্রিস আলী তার ছেলে কাজল ও মেরাজুলের উপর হামলা চালায়।
এসময় সুলেমান, খাইরুল, রতন, মজিবুর তাদের হাতে থাকা দা দিয়ে কাজল ও মেরাজুলের মাথা শরীরে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে তাদের চিৎকারে শুনে মেরাজুলের স্ত্রী নাজমুন নাহার এগিয়ে গেলে তাকেও মারপিট করে আহত করে ফেলে রেখে চলে যায়।
পরে খবর পেয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী ও ধনপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড সদস্য রফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থাল থেকে আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে পাঠায়। এদিকে আহতদের মধ্যে ইদ্রিস আলী ও মেরাজুল ইসলামকে সুনামগঞ্জ হাস্পাতালের ভর্তি করে। এবং কাজলের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে সিলেট উসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এর সত্যতা নিশ্চিত করে বিশ্বম্ভপুর থানার এস.আই অঞ্জন বলেন, খবর পেয়েই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। তবে এখন কেউ কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে অভিযোগের ভিত্তিতেই আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ: বিগত ১২/০৭/২০২২ ইং তারিখে ওই জায়গায় নিয়ে বিরুদ্ধের জেরেই সুলেমান, খাইরুল, সাদিকুল ও হাবিবুর প্রতিপক্ষ ইদ্রিস আলীর ও তার ছেলেদের মারপিট করে। পরে নিরুপমা হয়ে ইদ্রিস আলী বাদি হয়ে তাদের বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যাহা- বিশ্বম্ভপুর থানার নন-এফআইআর প্রসিকিউশন নং-১৫/২০২২, তারিখ-০৪/০৮/২০২২ খ্রিঃ, ধারা-৪২৭/৫০৬ (২) পেনাল কোড।
সূত্রঃ বিশ্বম্ভরপুর থানার সাধারণ ডায়েরি নং-৯৯০, তারিখ- ১৪/০৭/২০২২ খ্রিঃ। বিধি-৩৫৪)