Saturday, November 23, 2024
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
Homeআজকের শীর্ষ সংবাদযাত্রী সংকটে হজের ১৪ ফ্লাইট বাতিল

যাত্রী সংকটে হজের ১৪ ফ্লাইট বাতিল

সৌদিতে বাড়ি ভাড়া না করায় ভিসা পেতে জটিলতা, হজ এজেন্সিগুলোর গাফিলতি, ৩০ শতাংশ হজযাত্রীকে মদিনায় পৌঁছানোর শর্তের কারণে এবার একের পর এক হজ ফ্লাইট বাতিল হচ্ছে। সোমবার (১২ জুন) পর্যন্ত মোট ১৪টি হজ ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।

এরমধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ৯টি, সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের ৫টি ফ্লাইট। সব ধরনের প্রস্তুতি থাকলেও ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় শেষ মুহূর্তে সাড়ে ৫ হাজার হজযাত্রী সৌদিতে যেতে পারেননি।

হজ মন্ত্রণালয় ও হজ অফিস সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গত ২১ মে থেকে হজ ফ্লাইট শুরুর পর এখন পর্যন্ত ১৪টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে মদিনাগামী ফ্লাইট বাতিল হয়েছে ১১টি। হজ এজেন্সিগুলো নির্ধারিত সময়ে টিকিট না কাটা, মদিনাগামী যাত্রী না পাওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সোমবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সৌদি আরবের ‘সৌদিয়া’ ও ‘ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্সের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। সেখানে চলতি বছরের হজের ফ্লাইট সম্পর্কে জানতে চান প্রতিমন্ত্রী।

বৈঠকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শফিউল আজিম জানান, বিমানের যেকটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে সবকটি হজ এজেন্সির গাফিলতির কারণে। তারা টিকিট বুকিং দিয়েও শেষ মুহূর্তে হজযাত্রী দিতে পারেনি।

এছাড়াও ৩০ শতাংশ মদিনাগামী যাত্রী দেওয়ার কারণে চলতি বছর নতুন করে সংকট তৈরি হয়েছে। এসব কারণে ২২ জুন শেষ ফ্লাইটের পর আরও অতিরিক্ত ১০টি ফ্লাইট পরিচালনা করার জন্য হজ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানান তিনি। বিষয়টি প্রতিমন্ত্রী আমলে নেন এবং হজ অনুবিভাগকে এ বিষয়ে সৌদি আরবের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বলেন। একই বক্তব্য দেয় সৌদিয়া ও ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস।

বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী জানান, কোনো অবস্থাতেই হজ ফ্লাইট ২৪ জুনের পর করা যাবে না। এরমধ্যে সব হজযাত্রীকে সৌদিতে পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেন সংশ্লিষ্টদের।

বৈঠকে বিমান থেকে জানানো হয়, গত ২৬ মে দুটি, ২৮, ২৯ একটি করে, ৩১ মে দুটি, ৩ জুন দুটি, ৬ জুন দুটি, ৮ জুন একটি, ৯ জুন একটি, ১১ জুন দুটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। আরও কয়টি ফ্লাইট বাতিল হতে পারে জানতে চাওয়া হলে বিমান সঠিক তথ্য দিতে না পারলেও, সামনে আরও ফ্লাইট বাতিল হবে এমনটি জানানো হয়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শফিউল আজিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, হজযাত্রী না দেওয়া এবং মদিনাগামী যাত্রী সংকটের কারণে যেকটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে, তা সমন্বয় করার জন্য অতিরিক্ত কয়েকটি ফ্লাইট চেয়েছি। হজ মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের আশ্বস্ত করেছে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে। তিনি জানান, ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় বিমান আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। তারপরও হজযাত্রীদের সৌদিতে পৌঁছে দেওয়া এবং নিয়ে আসার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।

এর আগে গত ৫ জুন কতটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে এবং ওইসব ফ্লাইটে কোন কোন এজেন্সি টিকিট বুকিং দিয়েছিল তা জানতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে চিঠি দেয় ধর্ম মন্ত্রণালয়। এছাড়া ক্যাপাসিটি লস পূরণে বিমানকে ১০টি অতিরিক্ত ফ্লাইটের জন্য এবং সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইন্সকেও সৌদি সিভিল এভিয়েশনের (জিএসিএ) কাছে আবেদন করতে বলেছে মন্ত্রণালয়।

জানতে চাইলে হজ অফিস (আশকোনা) পরিচালক সাইফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, যে ১৪টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে, কেন বাতিল হয়েছে তার কারণ জানতে আজকে এই বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে বিমান ফ্লাইট বাতিলের কারণ বলেছে।

এরপর তারা নতুন কয়েকটি ফ্লাইট পরিচালনা করার জন্য অনুমতি চেয়েছে। তাদের অনুমতির কারণ অনেকটা যৌক্তিক মনে হয়েছে বলে আজকের (সোমবার) বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং সে অনুযায়ী সিভিল এভিয়েশনের (জিএসিএ) কাছে আবেদন করা হয়েছে। আশা করি নতুন ফ্লাইটের অনুমতি মিলবে।

ফ্লাইট সূচি অনুযায়ী, আগামী ২২ জুন সৌদি আরবে হজযাত্রার শেষ ফ্লাইট যাবে। আর হজযাত্রীদের ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ২ জুলাই, শেষ ফিরতি ফ্লাইট ২ আগস্ট। এ বছর প্রি-হজ ফ্লাইটে মোট ১৬০টি ডেডিকেটেড ফ্লাইট পরিচালনা করবে বাংলাদেশ বিমান। এরমধ্যে ঢাকা-জেদ্দা রুটে ১১৬টি, ঢাকা-মদিনা রুটে ২০টি, চট্টগ্রাম-জেদ্দা রুটে ১৪টি, চট্টগ্রাম-মদিনা রুটে ৬টি, সিলেট-জেদ্দা ও সিলেট-মদিনা রুটে দুটি করে ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুন বা ২৮ ‍জুন পবিত্র হজ পালিত হবে। বাংলাদেশ থেকে এবার এক লাখ ২২ হাজার ২২১ জন হজ পালনে যাচ্ছেন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments