The Team Phoenix, একটি অলাভজনক সংস্থা যা সাইবার নিরাপত্তা ও প্রযুক্তি ডোমেইনে সকলের সহযোগিতার জন্য কাজ করছে। “হারনেস দা পাওয়ার অফ কোলাবোরেশন” স্লোগান নিয়ে তারা 14 অক্টোবর 2023 তারিখে ঢাকার আগারগাঁও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে “রেনাসকন 2023” এর আয়োজন করে।
এটি বাংলাদেশ এবং এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে প্রথম পার্পল টিমিং-ভিত্তিক সাইবার নিরাপত্তা সম্মেলন। ইভেন্টে, বিভিন্ন সাম্প্রতিক এবং আপগ্রেডেড শিল্প-চাহিদার বিষয়গুলির উপর আলোচনা হয়েছিল এবং বিশেষজ্ঞরা প্রযুক্তিগত নতুন নতুন বিষয়ে তাদের মতামত দিয়েছেন। সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়ার এ.আর. মাহির “আনকভারিং ইন্টারনেট থ্রেটস থ্রু অ্যাডভান্সড এনালাইসিস এন্ড ভিজুয়ালাইজেশন” সম্পর্কে কথা বলেছেন, অক্টাগ্রাম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ হাসান শাহরিয়ার ফাহিম “ফ্রম এ জেনারেল ডায়েরি টু বিয়ন্ড – এ পার্পল টিম কেস স্টাডি” নামে একটি কেস স্টাডির বিষয়ে বিস্তারিত বলেছেন।
আরেকজন স্পিকার, প্রোডাক্ট সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়ার ফাতিন সিরাত এবং সফটওয়্যার ডেভেলপার মোঃ সৈকত যৌথভাবে “ডেমিস্টিফাইং ড্যাম ভালনারেবল ফ্লাস্ক অ্যাপ্লিকেশন” নামে তাদের একটি প্রজেক্ট উন্মোচন করেন। সাইবার সিকিউরিটি প্রফেশনাল জুবায়ের আলনাজি জাবিন “আনভাইলিং দি মিথস: এক্সপ্লোরিং ক্লাউড সিকিউরিটি মিসকন্সেপশন্স ” সম্পর্কে বিশদ বর্ণনা করেছেন।
অনুষ্ঠানে দুইজন প্রধান বক্তা ছিলেন; একজন জাতীয়, এবং আরেকজন আন্তর্জাতিক।
এশিয়া প্যাসিফিক নেটওয়ার্ক ইনফরমেশন সেন্টার- APNICএর আদলি ওয়াহিদ “লার্নিং ফ্রম হানিপটস” বিষয়ে কী-নোট উপস্থাপন করেন এবং ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের ইনফরমেশন সিকিউরিটির প্রধান মোঃ আবুল কালাম আজাদ “সিকিউরিটি ব্রিচ: আর ইউ প্রিপারেড টু রেস্পন্ড?” নিয়ে কথা বলেন।
স্বাধীন নিরাপত্তা গবেষক আলমাস জামানের উপস্থাপনায় “স্ট্রিং অফ ইলিউশনস” এর উপর আরেকটি সেশন ছিল এবং “সাইবার সিকিউরিটি প্রফেশনালদের ভূমিকা: বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে ” নিয়ে কথা বলেন এ কে এম সাজ্জাদ আলম, পিপিএম, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার, ডিএমপি, ঢাকা। তিনি এই ফিল্ডে কাজ করার সমস্ত প্রতিকূলতা এন্ড করণীয় নিয়ে আলোচনা করেছেন।
টিম ফিনিক্সের প্রতিষ্ঠাতা এ এস এম শামিম রেজা বলেন, ডিজিটাল ল্যান্ডস্কেপ এবং সংশ্লিষ্ট ঝুঁকির পরিপ্রেক্ষিতে সাইবার নিরাপত্তা সেমিনার বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। হ্যাকিং, ডেটা ব্রিচ এবং রানস্যামওয়ের আক্রমণের মতো সাইবার হুমকি বাংলাদেশে বাড়ছে। এই হুমকিগুলি ব্যক্তি এবং ব্যবসাকে বিপন্ন করে এবং দেশের অর্থনীতির জন্য ঝুঁকি তৈরি করে।
সাইবার সিকিউরিটি কনফারেন্স এবং সেমিনারগুলি মানুষকে নিজেদের এবং তাদের ডিজিটাল সম্পদগুলিকে সুরক্ষিত করার জন্য শিক্ষিত এবং ক্ষমতায়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই সেমিনারগুলি সাইবার নিরাপত্তায় কাজ করতে ইচ্ছুক লোকদের প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা উন্নয়ন প্রদান করে। এই ডিজিটাল নিরাপত্তা এবং স্থিতিস্থাপকতার জন্য একটি শক্তিশালী সাইবার নিরাপত্তা কর্মী বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি সাইবার শিল্পে অবদান রাখার জন্য সচেতনতা সৃষ্টি এবং একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার জন্য প্রতি বছর এই ধরনের একটি সম্মেলনের আয়োজন করতে চান।
এ কে এম সাজ্জাদ আলম, পিপিএম, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার, ডিএমপি বলেন, “বাংলাদেশে, সাইবার নিরাপত্তা পেশাদাররা দেশের ডিজিটাল ল্যান্ডস্কেপ রক্ষার জন্য রেস্পন্সিবল। তারা সাইবার হুমকি সনাক্ত করে এবং বন্ধ করে, সাইবার নিরাপত্তা নীতি তৈরি ও প্রয়োগ করে এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সাথে সম্মতি নিশ্চিত করে। “
এই বিশেষজ্ঞরা গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো, ডেটা গোপনীয়তা এবং সরকারী ব্যবস্থা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা সাইবার হামলার ঝুঁকি কমায়, জনসচেতনতা বাড়ায় এবং আন্তঃসংযুক্ত বিশ্বে বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তা স্থিতিস্থাপকতাকে শক্তিশালী করতে দক্ষ কর্মী বাহিনী গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
তিনি বলেন, “দ্রুত ডিজিটালাইজড বিশ্বের চ্যালেঞ্জের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সাইবার কর্মী বাহিনী তৈরি করতে আমাদের আরও কাজ করতে হবে”।
ইভেন্টে যোগদানকারী অংশগ্রহণকারীরা বলেন, “এ ধরনের ইভেন্ট নিয়মিত আয়োজন করা উচিত যা ব্যবহারিক জ্ঞান সংগ্রহের পাশাপাশি নেটওয়ার্কিংয়ের সুযোগ তৈরি করে”।
অনুষ্ঠানটির পৃষ্ঠপোষকতা করেছে ব্র্যাকনেট, থ্রেটসিমস, মেঘঅপস। এটি সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অপারেটরস গ্রুপ – SANOG এবং BGD e-GOV CIRT দ্বারা সমর্থিত ছিল। টেকনোলজি পার্টনার ব্র্যাকনেট, রেজিস্ট্রেশন পার্টনার ট্যাপকরি, মিডিয়া পার্টনার ইনফোসেক বুলেটিন, অ্যাফিলিয়েট পার্টনার আইসিটি ডিভিশন, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, ইনোভেশন ডিজাইন অ্যান্ড এন্টাপ্রেনারশিপ একাডেমি – IDEAb, ল্যাব এআর এবং পেন্টেস্টার স্পেস।
সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির মহাপরিচালক জনাব আবু সাঈদ মোঃ কামরুজ্জামান এনডিসি। কামরুজ্জামান স্যার তার বক্তৃতায় সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা এবং বাংলাদেশের ডিজিটাল স্থানকে সুরক্ষিত করতে এর ভূমিকার কথা উল্লেখ করেছেন। এত অল্প বাজেটে সারাদিন ব্যাপী সাইবার সিকিউরিটি কনফারেন্স পরিচালনা করার জন্য TheTeamFhoenix যে প্রচেষ্টা চালিয়েছে তার প্রশংসা করেছেন তিনি। এছাড়াও তিনি আগামীতে TheTeamPhoenix এবং renasCON-এর প্রচেষ্টায় আরও সাহায্য ও সহযোগিতা করতে চান।
সারাদিনে ৪৫০ এর বেশি ব্যক্তি এবং গ্রুপ অংশগ্রহণ করেছেন, এবং অংশগ্রহণ কারীদের মধ্যে ছিলেন ছাত্র, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, স্বাধীন নিরাপত্তা গবেষক, নেটওয়ার্ক অপারেটর, প্রতিরক্ষা, আইন প্রয়োগকারী, ব্যাঙ্ক কর্মকর্তা, কর্পোরেট, সাইবার নিরাপত্তা-ভিত্তিক সম্প্রদায়, প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, সরকারি কর্মকর্তা, আইটি-পরিষেবা প্রদানকারী, ইত্যাদি