মোহাম্মদ উল্লাহ সোহেল, ইতালি প্রতিনিধি: ইতালিতে ধর্মীয় ভাব গাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে পালিত হয় ঈদুল ফিতর। মেসত্রের পিরাগেত্তো পার্কের খোলা মাঠে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয় সকল ন’টায়। সেখানে প্রায় দুই হাজার মুসল্লি শরিক হন। এ জামায়াতের ইমামতি করেন, মাওলানা সাদেক আহমদ। তিনি বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর জন্য দোয়া করেন এবং কম্যুনিটির উদ্দেশ্যে বলেন, প্রত্যেক অভিবাসীর উচিৎ স্থানীয় আইন কানুনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া। বিশেষ করে মুসলিম অভিবাসীদের আচারণ এমন হওয়া উচিৎ যাতে স্থানীয়রা মুসলিম আদর্শের প্রতি অনুপ্রাণিত হয়।
ইতালির ভেনিসে পবিত্র ঈদ উল ফিতর উদযাপিত হয়েছে ১০ এপ্রিল, মঙ্গলবার। দুইটি খোলা স্থানসহ শহরের অন্তত ৬ জায়গায় ১৮টি ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। এসব জামায়াতে বাংলাদেশিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় ১৫ হাজার মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন।
ভেনিসের মেসত্রে এবং মারগেরার এসব ঈদ জামায়াত শুরু হয় ভোর সাড়ে ছয়টা থেকে। এ বছর ঈদ কর্ম দিবসে হওয়ায় অনেকে কর্মস্থল থেকে ছুটি নিতে পারেননি। তারা প্রথম জামায়াতে নামাজ আদায় করে ছুটেছেন কর্মস্থলে। যারা ছুটি নিতে পেরেছেন তারা প্রায় সবাই ট্রেডিশনাল পোষাক পরে ঈদের জামায়াতে শরিক হন। জামায়াতগুলোয় অভিভাবকদের সাথে অনেক শিশু কিশোরকেও অংশ নিতে দেখা যায়।
ইমাম সাদেক আহমদ সবাইকে সতর্ক হওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, অল্প কজন উচ্ছৃঙ্খল মানুষের জন্য আমাদের কম্যুনিটির প্রায় ২০ বছরের অর্জন আমরা নষ্ট হতে দিতে পারি না। ইতালির স্থানীয় প্রশাসনসহ সব মহলে বাংলাদেশি কম্যুনিটির সুনাম রয়েছে, যা একদিনে তৈরী হয়নি। তিলে তিলে আমারাই গড়ে তুলেছি। এটা যেনতেনো ভাবে নষ্ট হতে দেয়া যায় না।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভেনিসের বাংলাদেশি অভিবাসীদের দুই গ্রুপের মধ্যে প্রকাশ্যে মারামারি হয়, যার জেরে বাংলাদেশে একজন খুন হয়। যা ইতালিয় মিডিয়ায় ব্যাপক সমালোচিত হয়।
ঈদের নামাজ শেষে শহরের বিভিন্ন পানশালায় বাংলাদেশি অভিবাসীদের আড্ডা জমে ওঠে। বিকেলে পরিবারগুলো বিভিন্ন পার্কসহ দর্শনীয় স্থানগুলোয় ভিড় জমায়।
উল্লেখ্য, এ বছর ইতালির মুসলিম কম্যুনিটি থেকে ঈদের দিনে মুসলিম শিক্ষার্থীদের ছুটি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানানো হয়। তবে ছুটি ঘোষনা করা না হলেও অধিকাংশ স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগে থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ঈদ উদযাপনের জন্য মুসলিম শিক্ষার্থীরা বাসায় থাকতে পারবে।
জানা যায় ইতালির রাজধানী রোম, মিলানো, নাপোলিসহ ছোট বড় প্রায় ৬২টি শহরে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব জামায়াতে প্রায় ৫ লক্ষাধীক মুসলিম অভিবাসী অংশগ্রহণ করেছেন।