বরিশাল প্রতিনিধি: বরিশালের বানারীপাড়ায় সম্প্রতি ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতারকৃত স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীর পরিবার ছেলে মেয়ের ডি এন এ টেস্টের আবেদন জানিয়েছেন।
উপজেলার পৌর শহরের ৯ নং ওয়ার্ডের আনিছুর রহমানের স্ত্রী লাকি বেগম তারই ভাষুর একই বাড়ির মাহবুব খলিফার ছেলে ও বাদীর ছেলে দক্ষিন নাজিরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে সদ্য ২৪ এ এস এস সি পরীক্ষা দিয়েছে। সদ্য ২৪ এ এস এস সি পরীক্ষা দেয়া শিক্ষার্থী আলী হোসেনকে বিবাদী করে তার মেয়েকে জোর পূর্বক ধর্ষনের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ ( সংশোধিত ২০২০) ধারায় মামলা দায়ের করেন।
মামলায় বানারীপাড়া থানা পুলিশ বিবাদী আলী হোসেনকে গ্রেফতার করে কোর্ট হাজতে প্রেরন করে।
অভিযোগ পত্রে ছেলের বয়স ১৯ বছর দিলেও বাস্তবিক ছেলে নাবালক হওয়ায় মহামান্য আদালত বিবাদী পক্ষের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে শিশু শোধনাগার যশোরে পাঠিয়ে দেয়।
অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে, বাদী লাকি বেগমের বাড়িতে কোন বাথরুম ও গোসলখানা না থাকায় বাদীসহ তার পরিবার বিবাদীদের ঘরে সর্বদা গোসল করতে যেত। কিন্তু সরে জমিন তদন্ত এবং মাহবুব খলিফার বক্তব্য অনুযায়ী, বাদীর বাড়িতে পাকা বাথরুম ও গোসলখানা রয়েছে। বিবাদী পক্ষ আরো দুটি যুক্তি দাড় করান, তার মধ্যে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে ধর্ষনের বিবরন। কিন্তু বাস্তব দিকে বিবাদী পক্ষের জোড়ালো দাবী একটি ছেলে জোর করে কোন মেয়ের পাজামা খুলে পাশাপাশি হাত দিয়ে মুখ চেপে ধর্ষন করতে পারে না, হয় বিষয়টি মিথ্যা না হয় উভয়ের সন্মতিতে। একটি ছেলের হাত দুইখান, সে একই সংগে জোর পূর্বক পাজামা খোলা ও মুখ চেপে ধরা এবং ধর্ষন করা বিষয়টি একে বারেই সম্ভব নয়।
বিবাদীর পরিবার আরো বলেন, অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে ধর্ষনের পূর্বে বিবাদী আলী হোসেন বার বার বাদীর মেয়েকে কুপ্রস্তাবসহ ধর্ষনের চেষ্টা করতো এবং বিবাদীর পরিবারকে জানানো হয়েছে তাহলে এঘটনার পর বিবাদীর মেয়ে ঐ ঘরে কেন গোসলে যেত, যেহেতু বাদীর বাড়িতে পাকা গোসলখানা রয়েছে।
বিভিন্ন যুক্তি তর্ক ও আইনী বিভিন্ন বিষয় থাকায় মহামান্য আদালত বিষয়গুলো আমলে নিয়ে বিবাদী আলী হোসেনের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
এদিকে বিবাদী পক্ষ জানায়, ঐ বাড়ির সমস্ত জমির অর্ধেকের মালিক আমি মাহবুব খলিফা। আমার বিরুদ্ধে তারা বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র করছে। এমনকি মাদক দিয়ে হলেও আমিসহ আমার পরিবারকে ধ্বংস করার পায়তারা চালাচ্ছে। বাদীর মেয়ে আমার ভাইয়ের মেয়ে, মানে আমার ও মেয়ে। আমি ও চাই এই ঘটনা সত্যি হলে অপরাধীর বিচার হোক,তবে তা সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে।
তিনি আরো বলেন, ধর্ষণ মামলা হতে পারে কিন্তু প্রকৃত ধর্ষণকারীর বিচার হওয়া উচিত। আমি কোর্ট হাজতে আমার ছেলের সাথে কথা বার্তা ও পারিপাশ্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে বিশ্বাসের সহিত বলতে পারি এই ঘটনার সহিত আমার ছেলে জড়িত নয়। তাই প্রকৃত ঘটনাকে সামনে আনতে হলে ছেলে ও মেয়ের জীন টেস্ট, ডি এন এ টেস্ট খুবই গুরুত্বপূর্ন। এর মাধ্যমে জানা যাবে আমার ছেলে এই ঘটনায় জড়িত কিনা। তাই আমি সবার কাছে জোর দাবী জানাই ছেলে ও মেয়ের জীন টেস্ট, ডি এন এ টেস্ট করানো হোক।
এদিকে ২০০৬ সালে মাহবুব খলিফার বাবা মোঃ আব্দুল হক খলিয়া জীবিত থাকা অবস্থায় মাহবুব খলিফার ছোট ভাইয়ের বৌয়ের বোন বাদী হয়ে মাহবুব খলিফার বাবাসহ ৫ ভাইর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। মাহবুব খলিফা বলেন, বসেই সময় আমার বড় ভাই হাবীবুর রহমানসহ অন্যান্য ভাইয়েরা রিকসা চালিয়ে দিনানিপাত করত। ঐ সময় আমার অবস্থা কিছুটা ভাল থাকায় আমার বাবা আমাকে বলে তুই ২০ হাজার টাকা দে, তাহলে আমাদের মামলা তুলে নিবে, আমি বাবার কথা মত ২০ হাজার টাকা দেই। কিন্তু তারা মামলা না তোলায় বাবাসহ আমরা সবাই জেলহাজতে চাই। পরবর্তী মামলা পরিচালনার জন্য আমার বাবা আমাকে বলে তুই খরচ কর পরবর্তীতে দেখা যাবে, আমি বাবার কথামত ৭০ হাজার টাকায় আমার ট্রলি গাড়ি বিক্রি করে দিয়ে মামলা চালানোর জন্য টাকা দিলে পরবর্তী আমার বড় ভাই টাকার হিসাব দিতে পারে না। ঐ সময় আমার বাবা আমাকে ২ শতাংশ জমি লিখে দেয়। আমি বাবাকে বলি বাবা আমার এতো টাকা গেলো, বাবা বললো আল্লাহ তোকে দিবে। সেই সময় থেকেই আমার ভাইয়েরা আমার সাথে বৈড়ি আচারণ শুরু করে অদ্যবধি অব্যাহত রেখেছে।