মধ্যনগর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চল মধ্যনগরে নদ-নদীর পানি কিছু কমে আবারও বাড়তে শুরু করেছে। উপজেলার সোমেশ্বরী ও উব্দাখালী নদীর পানি উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। উপজেলার চারটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হয়ে ১০ দিন ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছে। নদ-নদীর পানি বাড়তে থাকায় তাদের দুর্ভোগ আরো বেড়েছে।
অনেকের বাড়িঘরে পানি থাকায় শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানি আর গবাদিপশুর খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। জ্বালানির অভাবে চুলা জ্বলছে না। পাশাপাশি গো-খাদ্যের সংকট থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বানভাসিরা। এদিকে বন্যার পানির কারণে রাস্তা ঘাট তলিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে।
জানা যায়, গত ১৭ জুন প্রথমবারের মতো বন্যায় মধ্যনগর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করে মানুষ। সেই বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই দ্বিতীয় দফায় জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে আবারও বন্যা হানা দেয়। এতে আবারও ক্ষতিগ্রস্ত হয় মানুষ। তারপর নদ-নদীর পানি কমতির দিকে ছিল।
উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সোমেশ্বরী ও উব্দাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জ জেলায় ২৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়াও ভারতের চেরাপুঞ্জিতেও ৩১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে বলেই পানি কমে আবারও বাড়তে শুরু করেছে।
উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের হামিদপুর গ্রামের আজিদ মিয়া বলেন, ‘একের পর এক বন্যায় আমরারের নিঃস্ব কইরা ফালাইতাছে। আমরা দিনরাত বহুকষ্টে টিক্যা আছি। বারে বারে যদি এইভাবে বন্যা হয় তাইলে আমরা কি কইরা বাঁইচা থাকমু। আমরাও মানুষ। আমাদেরও তো জীবন আছে। এই বন্যায় আমরারের একবারের নিঃশেষ কইরা দিছে।’
ওই ইউনিয়নের মোহাম্মদ আলীপুর গ্রামের নুরাম্মদ আলী জানান, পানি কমে আবার বাড়তেছে। একই তো আমাদের দুর্ভোগ, তার ওপর পরিবারের লোকজন, গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছি। গবাদি পশু কতক্ষণ পানিতে দাড়িয়ে থাকতে পারে বলেন? দূরে যে এক জায়গায় রেখে আসব, চুরির ভয়ে সে ভরসা পাই না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অতীশ দর্শী চাকমা বলেন, ‘প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে আবারও নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। যদি বন্যার সৃষ্টি হয় তাহলে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের সবধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।’
দেশসংবাদ/এএসএম