রবার্ট লেভান্ডভস্কির দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বড় জয় পেয়েছে স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনা। চেক প্রজাতন্ত্রের ক্লাব ভিক্টোরিয়া প্লজেনকে উড়িয়ে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শুরু করেছে কাতালান ক্লাবটি। পোলিশ ‘গোলমেশিনের’ হ্যাটট্রিকের সঙ্গে ফ্রাঙ্ক কেসি এবং ফেরান তোরেস একবার করে লক্ষ্যভেদ করলে ৫-১ গোলের বড় জয় পায় বার্সেলোনা। এছাড়া যোগ করা সময়ের নাটকীয়তায় পর্তুগিজ ক্লাব পোর্তোকে ২-১ গোলে হারিয়েছে ডিয়েগো সিমিওনের অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বার্সেলোনার গ্রুপটিকে এবার ‘মৃত্যুকূপ’ বলা হচ্ছে। কারণ গ্রুপ ‘সি’তে বার্সার সঙ্গে রয়েছে জার্মান চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখ এবং ইতালিয়ান জায়ান্ট ইন্টার মিলান। গ্রুপের অন্য দল চেক ক্লাব প্লজেন। কাগজে-কলমে গ্রুপের একমাত্র ‘সহজ’ প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই শুরু হয়েছে বার্সার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ মিশন।
প্রথম বাঁশি থেকে অনুমিতভাবেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ থাকে বার্সেলোনার হাতে। সেই নিয়ন্ত্রণের ফলস্বরূপ গোল পেতেও বেশি অপেক্ষা হয়নি তাদের। মাত্র ১৩ মিনিটেই একটি কর্নার থেকে সেন্টার ব্যাক জুলস কুন্দের মাথা হয়ে বল আসে কেসির সামনে, তার মাপা হেডে বল জড়িয়ে যায় প্লজেনের জালে। আর তাতেই খুলে যায় গোলের ‘স্লুইসগেট’।
ম্যাচের ৩৪ মিনিটে ডান পায়ের জোরালো শটে, প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ডাইভিং হেডারে এবং ৬৭ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে দারুণ এক শট লক্ষ্যভেদ করে কাতালান ক্লাবটির হয়ে নিজের প্রথম হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন লেভানডভস্কি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এই পোলিশ স্ট্রাইকারের ষষ্ঠ হ্যাটট্রিক, মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের এই আসরে তার চেয়ে বেশি হ্যাটট্রিক রয়েছে কেবল ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো এবং লিওনেল মেসির, তারা দুজনই করেছেন আটটি করে হ্যাটট্রিক। প্লজেনের বিপক্ষ এই হ্যাটট্রিক অনন্য এক রেকর্ডও গড়া হয়ে গেছে তার। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে তিনটি ভিন্ন ক্লাবের (বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, বায়ার্ন মিউনিখ, বার্সেলোনা) হয়ে হ্যাটট্রিকের যে এটাই প্রথম!
লেভান্ডভস্কির হ্যাটট্রিকের মাঝে অবশ্য একবার বার্সার জালে বল পাঠায় প্লজেন। ৪৪ মিনিটে প্লজে মিডফিল্ডার ইয়ান সিকোরার সেই গোল অবশ্য পরে ফলাফলে কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি, শুধু হারের ব্যবধানই কিছুটা কমিয়েছে।
৭১ মিনিটে আরও একবার প্লজেনের জাল কাঁপায় বার্সেলোনা। এবার গোলদাতা বদলি হিসেবে নামা ফেরান তোরেস। মাঠে নামার ছয় মিনিটের মধ্যেই লেভান্ডভস্কির হ্যাটট্রিক গোলটি বানিয়ে দেওয়ার সঙ্গে নিজেও গোল পেয়ে যান এই স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড।
গ্রুপ ‘সি’র অন্য ম্যাচে ইন্টার মিলানকে ২-০ গোলে হারিয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ। সান সিরোতে ২৫ মিনিটে লেরয় সানে এবং ৬৬ মিনিটে দানিলো দা’মব্রোসিও’র আত্মঘাতী গোলে জয় পায় বাভারিয়ানরা।
অন্যদিকে গ্রুপ ‘বি’র অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ বনাম পোর্তো ম্যাচে দর্শকরা সাক্ষী হয়েছেন চূড়ান্ত নাটকীয়তার। ৯০ মিনিট পর্যন্ত গোলশূন্য থাকার পর যোগ করা সময়ে হঠাৎ গোলের ঝড় ওঠে ওয়ান্ডা মেট্রোপলিতানোয়।
৯১ মিনিটে অ্যাটলেটিকো ডিফেন্ডার মারিও হারমোসোর ডিফ্লেক্টেড শটে ভাঙে পোর্তোর প্রতিরোধ। ৯৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে দলকে সমতায় ফেরান পোর্তোর মাতেউস উরিবে। তবে ১০১ মিনিটে পোর্তোকে হতাশায় ডুবিয়ে কর্নার থেকে হেডে লক্ষ্যভেদ করে অ্যাটলেটিকোকে পূর্ণ তিন পয়েন্ট এনে দেন দলটির ফরাসি ফরোয়ার্ড আতোয়াঁন গ্রিজমান।
বাংলাপেইজ/ এএসএম