টানা বেশ কয়েকদিন ধরে নিম্নমূখী থাকার পর শনিবার খানিকটা বেড়েছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম। অবশ্য বাজার বিশ্লেষকদের ধারণা, শিগগিরই আবার দরপতন হবে তেলের বাজারে।
শনিবার বিশ্ববাজারে প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুড তেল বিক্রি হয়েছে ৯১ দশমিক ৩৫ ডলারে, আর ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) তেলের বিক্রয়মূল্য ছিল ব্যারেলপ্রতি ৮৫ দশমিক ১১ ডলার।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, আগের দিন শুক্রবারের তুলনায় শনিবার ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম প্রতি ব্যারেলে বেড়েছে ৫১ সেন্ট, ডব্লিউটিআই তেলের ব্যারেলে দাম বেড়েছে ১ সেন্ট। শতকারা হিসেবে এই দুই ধরনের বেঞ্চমার্কের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ২ শতাংশ।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের তেলসমৃদ্ধ অঞ্চল বসরার কয়েকটি তেল খনিতর রিগে (তেল উত্তোলন যন্ত্র) যান্ত্রিক গোলযোগ শুরু হওয়ায় দেশটি থেকে তেলের সরবরাহ কমে গেছে। তার প্রভাবেই শুক্রবার খানিকটা বেড়েছে অপরিশোধিত তেলের দাম।
অবশ্য ইতোমধ্যে রিগের সেই যান্ত্রিক গোলোযোগ মেরামত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরাকের কর্তৃপক্ষ। করোনা মহামারি শুরুর পর থেকেই আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ওঠানামা করছিল। সম্প্রতি তেলের বাজরের মন্দাভাবের বড় কারণ হিসেবে ডলারের মানের লাগামহীন বৃদ্ধিকেই চিহ্ণিত করেণে বাজার বিশ্লেষকরা।
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজার প্রায় সম্পূর্ণ ডলারনির্ভর। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগ পর্যন্ত অপরিশোধিত তেলের যাবতীয় আন্তর্জাতিক লেনদেন সম্পন্ন হতো ডলারে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর অবশ্য বৈশ্বিক বাজারে খানিকটা পরিবর্তন আসে। ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সামরিক অভিযানের জেরে দেশটির ওপর একগুচ্ছ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা।
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা থেকে জাতীয় অর্থনীতিকে বাঁচাতে নিজেদের মুদ্রা রুবলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্কিত লেনদেন করার ঘোষণা দেয় এককভাবে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম জ্বালানি তেল উৎপাদক ও রপ্তানিকারী দেশ রাশিয়া।
এদিকে, গত কয়েক মাস ধরে বিশ্বের অন্যান্য মুদ্রার তুলানয় ডলারের মান লাগামহীন ভাবে বাড়তে থাকায় তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডলারে লেনদেন করা বিভিন্ন মার্কিন ও আন্তর্জাতিক ব্যাংক সুদের হার বাড়িয়ে দেয়। ফলে নিজেদের ডলারের মজুত বাঁচাতে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে তেল কেনা কমিয়ে দিয়েছে চীন, ভারতসহ অপরিশোধিত তেলের ছোট-বড় বহু ক্রেতা দেশ।
উচ্চমূল্যের ডলারের পরিবর্তে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে রাশিয়া থেকে তেল কিনছে তারা।
বাংলাপেইজ/এএসএম