হেক্সা মিশনের লক্ষ্য নিয়ে এবারের বিশ্বকাপ শুরু করেছিল পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। কিন্তু সেই মিশন থেমে যায় কোয়ার্টার ফাইনালে। ইউরোপের দেশ ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে পরাজয়বরণ করতে হয় নেইমার জুনিয়রদের। বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়ে মাঠেই বাচ্চাদের মতো কাঁদতে দেখা যায় নেইমার, রিচার্লিসন, থিয়াগো সিলভাদের। বিদায়ের পর বিশ্বকাপ নিয়ে মুখ খোলেন সেরা তারকা নেইমার জুনিয়র।
ব্রাজিলের এমন বিদায়ের পর মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন নেইমার। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানিয়েছেন নিজের অনুভূতি। সেখানে তিনি লেখেন, ‘আমি (ওদের অনুমতি না নিয়েই) মেসেজগুলো প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ আমি দেখাতে চেয়েছি, আমরা জেতার জন্য কতটা মরিয়া ছিলাম এবং আমরা কতটা ঐক্যবদ্ধ। গ্রুপের সঙ্গে আমি যে সব মেসেজ আদান-প্রদান করেছি, সেগুলোর কিছু এখানে প্রকাশ করা হয়েছে।’
পিএসজি ফরোয়ার্ড তার ক্লাব সতীর্থ মার্কুইনহোসকে বার্তা দিয়েছেন, যার স্ক্রিনশট তিনি ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে শেয়ার করেছেন। মার্কুইনহোস যিনি ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে পেনাল্টি মিস করেছিলেন। নেইমার তার উদ্দেশে লেখেন, কেমন আছো? আমি তোমাকে বলতে চাই আমি তোমার বড় ভক্ত। একটি পেনাল্টি মিস তোমার সম্পর্কে আমার অনুভূতি পরিবর্তন করতে পারবে না। আমি সব সময়ে তোমার সঙ্গে আছি এবং তুমি জানো যে, আমি তোমাকে ভালোবাসি।
মার্কুইনহোস তার উত্তরে লেখেন, হে ব্রাদার, আমি একটু একটু করে উন্নতি করছি, পুরো পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার জন্য সময় নিচ্ছি! তোমার খবর কী? কেমন আছো? এই বার্তার জন্য এবং আমার সম্পর্কে চিন্তা করার জন্য ধন্যবাদ। তুমি সত্যিই দারুণ মানুষ। আমি সবকিছু ঠিকঠাক করতে চেয়েছিলাম।
অপরদিকে থিয়াগো সিলভার উদ্দেশে নেইমার লেখেন, আমাদেরকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। দুর্ভাগ্যবশত ব্যাপারটা ঘটে গেছে! আমি তোমাকে এই বিশ্বকাপটা দিতে চেয়েছিলাম। তুমি, দানি (আলভেস) এবং আমি সবাই এটার যোগ্য। কিন্তু ঈশ্বরের নিশ্চয়ই অন্য একটা উদ্দেশ্য আছে এবং তিনিই সবটা জানেন।
চতুর্থ বিশ্বকাপে খেলা সিলভা জবাবে লিখেছেন, এটা আমার কল্পনার চেয়েও বাস্তবে কঠিন। সত্যি করে বলতে, আমি এখনও বিষয়টি মেনে নিতে পারছি না। আমার বিশ্বাস হচ্ছে না, আমরা হেরেছি। প্রতিটা সময় আমাকে যন্ত্রণা দিচ্ছে, আমি কাঁদছি। তবে আমি ঠিক হয়ে যাব।
টাইব্রেকারে প্রথম পেনাল্টি মিস করা রদ্রিগোকে নেইমার লেখেন, তুমি একজন সেরা খেলোয়াড়। তোমার ক্যারিয়ারের সঙ্গে যুক্ত হওয়াটা সম্মানের। তোমার আইডল হিসেবে আমি তোমাকে বলতে চাই, ব্রাজিলের একজন ঐতিহাসিক ফুটবলার হিসেবে তোমাকে দেখতে চাই। পেনাল্টি তারাই মিস করে, যারা নেওয়ার সুযোগ পায়। আমি অনেক পেনাল্টি মিস করেছি এবং ঘুরেও দাঁড়িয়েছি। আমি এ সব ভুল থেকে শিখেছি।
রদ্রিগো জবাবে লেখেন, ধন্যবাদ আমার আইডল। আমি অনেক দুঃখিত তোমার স্বপ্নকে আরও দূরে ঠেলে দেওয়ার জন্য। আমি আশা করি, তুমি জাতীয় দলের হয়ে খেলা চালিয়ে যাবে।
ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম পেনাল্টি শট মিস করে ভেঙে পড়েন রদ্রিগো। নেইমারের কাছে ক্ষমাও চেয়ে নেন রিয়াল তারকা। তবে তরুণ সতীর্থকে সান্ত্বনা দিতে পিএসজি ফরোয়ার্ড লিখেছেন, ‘তুমি বলেছো তুমি দুঃখিত, তুমি কি পাগল হয়ে গেলে? তুমি দারুণ প্লেয়ার। একদিন ব্রাজিলকে ট্রফি জেতাবে। তোমার সাফল্য কামনা করি।
বাংলাপেইজ/এএসএম