হিজড়া বেশে পথরোধ। পরে জিম্মি করে নগ্ন ছবি ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল। এভাবেই এক কলেজ ছাত্রের সর্বস্ব লুটে নিয়েছে চক্র। এই ঘটনার শিকার সাইফুল ইসলাম। তিনি রাজধানীর মুন্সি আব্দুর রব কলেজের একাদশ শ্রেনীর ছাত্র। গত ২৩ জানুয়ারি বিকেলে ক্যাম্পাস থেকে বাসায় ফিরার পথে যাত্রাবাড়ী এলাকায় হিজড়ার খপ্পরে পড়েন। পরে ওই হিজড়াসহ আরও কয়েকজন তাকে যাত্রাবাড়ী এলাকায় একটি মেসে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে একজন পতিতার সাথে ছবি তুলে তার কাছ থেকে মুক্তিপন আদায় করা হয়। পরে তিনি থানা পুলিশের আশ্রয় নেন। অবশেষে ওই হিজড়াসহ মুক্তিপণ আদায়কারীচক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ওয়ারী) বিভাগ।
শনিবার (১৮ ফেব্রুযারি) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ওয়ারী) বিভাগের অতিঃ উপ-পুলিশ কমিশনার মো. তরিকুর রহমান এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, গত ২৩ জানুয়ারি বিকেল সোয়া ৩টার দিকে কলেজ থেকে ভিকটিম মো. সাইফুল ইসলাম বাসায় ফিরছিলেন। কিন্তু যাত্রাবাড়ী থানার চৌরাস্তা মোড় সংলগ্ন দক্ষিণ পার্শ্বের কাছাকাছি পৌঁছিলে অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন পুরুষ এবং তাদের সাথে থাকা এক জন হিজড়া তার পথরোধ করে। পরে চেতনানাশক ঔষুধ/দ্রব্যাদি প্রয়োগ করে অচেতন করে তাকে কৌশলে অনতিদূরে অবস্থিত একটি মেসের কক্ষে নিয়ে বন্দী করে রাখা হয়। কিছুক্ষণ পর হিজড়া লোকটি একজন পতিতাসহ সেই কক্ষে প্রবেশ করে ভিকটিমকে উলঙ্গ হতে বলে। ভিকটিম রাজি না হলে হিজড়ার সাঙ্গপাঙ্গরা সেই কক্ষে প্রবেশ করে ভিকটিমকে বেধড়ক মারপিট করে এবং পতিতার সাথে উলঙ্গ ছবি তুলতে বাধ্য করে।
তিনি আরও জানান, তারা ভিকটিমের সাথে থাকা নগদ ১ লাখ ৬৬ হাজার টাকা ও মানিব্যাগ কেড়ে নেয় এবং আরও টাকা দাবি করে। অন্যথায় মোবাইল ফোনে তোলা উলঙ্গ ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। এতে ভিকটিম ভীত হয়ে তার আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে আরও নগদ ২৪ হাজার টাকা বিকাশ করে দেয়।
পরবর্তীতে ওই ঘটনায় ভিকটিমের ভাই বাদি হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। মামলা নং-৩৫। ওই মামলার ছায়া তদন্ত শেষে জড়িত আসামিদের অবস্থান সনাক্ত করে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো. সোহাগ মিয়া ওরফে স্বজন ওরফে কাজল ওরফে হিজড়া সজনি (৩২), মো. নাছির (৪২), মো. আমানুর মন্ডল (৪২), মো. রাজু (২৬), মো. আব্দুর রহমান (৩৬) ও মো. হৃদয় মিয়া (২২)। তাদের মধ্যে মূল পরিকল্পনাকারী মো. সোহাগ মিয়া ওরফে স্বজন ওরফে কাজল ওরফে হিজড়া সজনি। নকল হিজড়া সেজে দীর্ঘদিন থেকে এই চক্রের সদস্যরা কৌশলে অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলেও জানান গোয়েন্দা পুলিশের ওই কর্মকর্তা।