Saturday, November 23, 2024
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
Homeবাংলাদেশখুলনাস্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার জেরে কলেজছাত্রকে খুন

স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার জেরে কলেজছাত্রকে খুন

যশোরের মণিরামপুরে কলেজছাত্র একরামুল ইসলামকে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন গ্রেপ্তার দুই ভাই। শুক্রবার (০১ এপ্রিল) তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। যশোরে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মাহাদী হাসান তাদের জবানবন্দি গ্রহণ শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আসামিরা হলেন- মণিরামপুর উপজেলার ভরতপুর গ্রামের হোসেন মোড়লের ছেলে আমিনুর রহমান ও কামরুল ইসলাম।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) উপপরিদর্শক সৈয়দ রবিউল ইসলাম পলাশ জানান, আটক কামরুলের স্ত্রী হীরা খাতুনের সঙ্গে কলেজছাত্র একরামুলের পরকীয়া ছিল। কামরুল কুয়েত প্রবাসী। পাঁচ মাস আগে তিনি দেশে ফিরে এসেছেন। বাড়িতে আসার পর তিনি স্ত্রীর পরকীয়ার কথা জানতে পারেন। কামরুলের ভাই আমিনুরও ভাবির সঙ্গে একরামুলের পরকীয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তিনি পরিবারের মানসম্মান রক্ষার্থে গোপনে একরামুলের সঙ্গে দেখা করে এই পথ থেকে সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তখন একরামুল উল্টো আমিনুরকে হুমকি দেন। তাদের সম্পর্কের ধারণকৃত ভিডিও তার মোবাইল ফোনে আছে বলেও দাবি করেন।

এ নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য আমিনুরকে নিষেধ করেন একরামুল। ফলে কোনো উপায় না পেয়ে একরামুলের কাছ থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে ওই আপত্তিকর ভিডিও ডিলিট করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন আমিনুর। ঘটনার দিন গত ২৮ মার্চ সন্ধ্যায় আমিনুর তার ভাতিজা মেহেদীর কাছ থেকে জানতে পারেন একরামুল নোয়ালী গ্রামের কাড়াখালী সেতুর ওপর অবস্থান করছেন। এ খবর পেয়ে তিনি গোপনে সেখানে গিয়ে তাকে দেখতে পান। এরপর বাড়ি ফিরে আসেন এবং একটি বৈদ্যুতিক তার নিয়ে ফের সেখানে যান। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই পেছন থেকে গলায় বৈদ্যুতিক তার পেঁচিয়ে একরামুলের কাছে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে দিতে বলেন আমিনুর।

বৈদ্যুতিক তার গলায় পেঁচানোর কারণে শ্বাসরোধে মারা যান একরামুল। তার শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ায় ভয় পেয়ে যান আমিনুর। পরে মরদেহটি ব্রিজের পাশে রেখে বাড়িতে চলে আসেন তিনি এবং সব ঘটনা ভাই কামরুলকে জানান। এ কথা শুনে কামরুল ভয় পেয়ে তাকে প্রচণ্ড বকাঝকা করেন। পরে দুই ভাই ঘটনাস্থলে যান এবং মরদেহ বস্তাবন্দি করে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে পাশের মদনপুর গ্রামের লিয়াকত আলীর পুকুর পাড়ে মাটিতে পুঁতে রাখেন।

পুলিশ কর্মকর্তা সৈয়দ রবিউল ইসলাম পলাশ জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুই ভাই ও তাদের ভাতিজা মেহেদীকে গত বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) সকালে গ্রেপ্তার করা হয়। শুক্রবার তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হলে আমিনুর ও কামরুল স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

নিহত একরামুল ভরতপুর গ্রামের মফিজুর মোল্লার ছেলে। তিনি মণিরামপুরের রাজগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ থেকে এ বছর এইচএসসি পাস করেন। গত ২৮ মার্চ রাতে তিনি নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় একরামুলের মা রেশমা খাতুন ৩০ মার্চ মণিরামপুর থানায় একটি জিডি করেন। ওই জিডির সূত্র ধরে পিবিআই কর্মকর্তারা গত বৃহস্পতিবার সকালে বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে আমিনুর, কামরুল ও মেহেদীকে গ্রেপ্তার করেন। পরে তাদের স্বীকারোক্তিতে মদনপুর গ্রামের লিয়াকত আলীর পুকুর পাড়ে মাটিচাপা দিয়ে রাখা একরামুলের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments