রাজধানীর কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠে থানা স্থাপনের প্রতিবাদ করায় রোববার দিনব্যাপী এক নারী ও তার ছেলেকে আটকে রাখে থানা পুলিশ। আজ তাদের আটকের ব্যাখ্যা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। সোমবার দুপুরে তেজগাঁও সরকারি বিজ্ঞান কলেজে ঈদ বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা (মা-ছেলে) লাইভ ভিডিওতে এসে কিছু অসঙ্গতিপূর্ণ তথ্য প্রচার করছিলেন। সে জন্য তাদের বারবার নিবৃত করার চেষ্টা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এক পর্যায়ে যখন থামাতে পারেনি তখন তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছিল এবং জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের সময়ে যেখানে খেলাধুলা করতাম সেই অবস্থাটা এখন আর নেই। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য আমরা কষ্ট বোধ করি। ঢাকার ডিসি (জেলা প্রশাসক) মাঠের জায়গাটি খাস জমি বলে চিহ্নিত করে বরাদ্দ দিয়েছে কলাবাগান থানাকে। সব প্রক্রিয়া শেষে যখন ভবন নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হয় তখন খেলার মাঠ রাখার দাবিতে অনেকে কথা বলেছেন।
মন্ত্রী বলেন, আমরা মনে করি খেলার মাঠে বাচ্চারা খেলাধুলা করবে এটাই স্বাভাবিক। খেলার মাঠের ব্যবস্থা যেমন করতে হবে আবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরও থানার জন্য জায়গাটা জরুরি। জায়গাটায় কী করা যায়, এটা আমরা পরে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।
গত ৩১ জানুয়ারি কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠে তারকাঁটার বেড়া দেয় পুলিশ। এ মাঠে কলাবাগান থানার নতুন ভবন নির্মাণ করার কথা রয়েছে। তবে মাঠটি দীর্ঘদিন ধরে কলাবাগান ও এর আশপাশের এলাকার ছেলে-মেয়েদের খেলার জায়গা হিসেবে পরিচিত। খেলার মাঠটি রক্ষায় বেশ কিছুদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিল শিশু-কিশোররা। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়ে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া শুরু করেন সমাজকর্মী সৈয়দা রত্না।
রোববার সকালে সৈয়দা রত্না ফেসবুকে লাইভে গিয়ে ওই মাঠটি দখল হয়ে যাওয়া নিয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছিলেন। এ সময় কয়েকজন সাদা পোশাকধারী পুলিশ তাকে লাইভ করতে নিষেধ করেন।
এর পরপরই ওই পুলিশ সদস্যরা তার মোবাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন এবং তাকে টেনে হিঁচড়ে একটি পুলিশ ভ্যানে তুলে নেন। সৈয়দা রত্নার লাইভের একটি অংশসহ এ ঘটনার ভিডিও ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। একই ঘটনায় সমাজকর্মী সৈয়দা রত্নার ছেলেকেও আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ।
আটকের ১২ ঘণ্টা পর ‘সরকারি কাজে ভবিষ্যতে বাধা দেবেন না’ মর্মে মুচলেকা দিয়ে রাত ১২ টার দিকে ছাড়া হয় তাদের।