খুলনায় পিবিআই পরিদর্শক মাসুদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ধর্ষণের শিকার কলেজছাত্রী। মঙ্গলবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, মাসুদ তাকে ধর্ষণ করেছেন। এ ছাড়া মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য মাসুদ এএসআই মিরানসহ আমাকে জড়িয়ে বিভিন্ন কুৎসা রটনা করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, পিবিআই পরিদর্শক মাসুদ ইউটিউব চ্যানেলে গান-বাজনা করেন। সেখান থেকে মাসুদের নম্বর সংগ্রহ করি। ১০ মে দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে ফোনে সমস্যার কথা বললে মাসুদ আমাকে পিবিআই অফিসে দেখা করতে বলেন। সেখানে গেলে মাসুদ আমার ফোনের সবকিছু দেখে ব্যস্ত আছেন বলে আমাকে পরে দেখা করতে বলেন। এরপর মাসুদ আমাকে ফোন করে একটি ইমো অ্যাকাউন্ট খোলার কথা বলেন।
তিনি আরও জানান, ইমো খোলার পর তার সঙ্গে যোগাযোগ হতো নিয়মিত। প্রতিদিন তার সাথে ৫ বার করে কথা বলতো মাসুদ। ১৩ মে ফোন দিয়ে তাকে জানানো হয় ঢাকা যাচ্ছেন তিনি। ১৪ মে ফোন দিয়ে মাসুদ তাকে পরেরদিন দেখা করার কথা বলেন। তখন ওপাশ থেকে জানানো হয় পিবিআই অফিসে, মাসুদ প্রতিউত্তরে বলেন, না।
১৫ মে দুুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ইমোতে ফোন দিয়ে মাসুদ তাকে ধর্মসভা মন্দিরের সামনে আসতে বলেন। ওই নারী ধর্মসভা মন্দির কোথায় তা জানেন না। উত্তরে মাসুদ রিক্সায় করে সেখানে আসতে বলেন। সেখানে তাকে বলা হয় সাইবার ক্রাইম অফিসে যেতে হবে। পরে ধর্মসভা মন্দির থেকে মোটরসাইকেলযোগে তাকে ছোট মির্জাপুরের একটি অফিসে নিয়ে যায়। রুমের ভেতর যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অপরিচিত এক ব্যক্তি অফিসের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দেন। এরপর মাসুদ তাকে ধর্ষণ করেন। নিজেকে রক্ষার শত চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তিনি।
ধর্ষণের ঘটনা কাউকে কিছু জানালে তাকে হত্যার হুমকি দেন মাসুদ। এর আগে তাকে মারধর করাও হয়। ওই অফিস থেকে বের হওয়ার পর তিনি রিক্সায় উঠে সরাসরি থানায় চলে আসেন। মাসুদও মোটরসাইকেল নিয়ে তার রিক্সার পিছু নিয়ে থানার গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন। ওখানে মাসুদের অবস্থান দেখে ভয় পান ওই নারী। এরপর খুলনা থানার একজন পুলিশ সদস্যের কাছ থেকে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুনের নম্বর সংগ্রহ করে বিষয়টি তাকে জানান ওই নারী।
খুলনা থানার পুলিশ তাকে নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে আলামত সংগ্রহ করার চেষ্টা করেন। সেখানে দেড় থেকে ২ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, খুলনা থানার এএসআই মো. মিরান শেখ ও আমাকে নিয়ে মাসুদ বিভ্রান্তিমূলক কথা ছাড়াচ্ছে। যা আজকের বিভিন্ন পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছেন তিনি। তিনি মিরান শেখ নামে কাউকে চেনেন না বলে সংবাদ সম্মেলনে জোর দাবি করেছেন। সোমবার (৩০ মে) মামলাটি আপোষ করার জন্য পিবিআই পরিদর্শক মাসুদ তার কাছে সোহেল নামে এক ব্যক্তিকে পাঠিয়েছেন।